বগুড়ায় দিন দিন করোনা নিয়ে সংকট আরো বড় হতে চলেছে। জেলায় গত দুই মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ১ এপ্রিল প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর চলতি জুন মাসে জেলায় এখন করোনা আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার। নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষ। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে সময়মত কোন রিপোর্ট এখন আর আসছে না। লাইনে দাঁড়িয়ে করোনাভাইরাসের নমুনা দিয়ে রিপোর্ট পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ৪ থেকে ৫ দিন। আবার অনেকে ২ থেকে ৩ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নমুনা দিতে না পেরে যাচ্ছেন বাড়ি।
বগুড়া জেলা সিভিল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ৯ জুন পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৪৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৭ হাজার ৬২১টি নমুনা। তাতে পজিটিভ এসেছে ৯৫৫ টি। সুস্থ ৭২ জন এবং মারা গেছেন ৮ জন। বাকি নমুনাগুলো এখনো পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে গত ২০ এপ্রিল থেকে ভাইরাস শনাক্তকরণ পিসিআর মেশিন দিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা শুরু হয়। দুই শিফটে মোট ১৮৮টি পরীক্ষা করা যায় এই ল্যাবে। গত ৩১ মে থেকে জেলার বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ফি পরিশোধের মাধ্যমে করোনা শনাক্তকরণ শুরু হয়েছে। সেখানেও রয়েছে সীমাবদ্ধতা।
বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শফিক আমিন কাজল জানান, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে রোগী কম থাকলেও এখন রোগীর চাপ বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে সংক্রমণও বাড়ছে। শুরুর দিকে রোগীর বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু এখন যে অবস্থা হয়েছে তাতে করে রোগীকেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। লাইনও বড় থাকছে। ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে নমুনা পরীক্ষাও দেরি হচ্ছে।
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, বগুড়ায় চিকিৎসকরা যতটা পারছেন দায়িত্ব পালন করছেন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বসানো হয়েছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব। সেখানে দুটি প্লেটে দিনে মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। এই ল্যাবে জনবল যেমন কম রয়েছে তেমনি আবার জেলার ১২টি উপজেলা থেকে নমুনা আসতে শুরু করেছে। যে কারণে জেলায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। বেড়ে যাওয়ার কারণে রিপোর্ট পেতেও বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, বেশ কিছু নমুনা জমে আছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। এত নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে যে চিকিৎসগণ হাঁপিয়ে উঠছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন