কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদনদীর পানি আবারো দ্রুত বাড়ছে। উজানের ঢলের পানি ও অবিরাম বৃষ্টির ফলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলসহ কুড়িগ্রাম জেলা।
শনিবার দুপুর তিনটায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, খুব দ্রুততম সময়ে অর্থাৎ শনিবার সন্ধ্যের মধ্যেই ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমর নদীর পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করবে এবং ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপরে চলে যাবে। পানি বাড়ার সাথে সাথে জেলায় ২য় দফা বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৫০মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুইদিনে প্রায় দেড়শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এ বৃষ্টিপাত আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। এদিকে, অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের পানির ঢলে আবারো জেলার সাড়ে ৪শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ২য় দফা বন্যা এখন বানভাসীদের দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে চরমে। দ্বিতীয় দফা বন্যা সৃষ্টি হলে কুড়িগ্রামের নদনদী তীরবর্তী লক্ষাধিক মানুষ মারাত্মক সংকটে পড়বেন। এর আগে পানিবন্দী প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের কষ্ট এখনও কমেনি।এদিকে, দ্বিতীয় দফা বন্যা মোকাবেলায় জেলায় সার্বিক প্রস্ততি নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং কুড়িগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব জিয়াউল হাসান। এসময় জেলার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান, সিভিল সার্জন ডা: হাবিবুর রহমান, জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: আবু মো: জাকির উল ইসলাম, জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা দীলিপ কুমার সাহা প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ইতোমধ্যে প্রথম দফা বন্যা মোকাবিলায় সরকারের দেয়া ত্রাণ যথাযথভাবে বানভাসীদের প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফা বন্যা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়ে বানভাসীদের কষ্টে ত্রাণ বিতরণসহ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ত্রাণ পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে কোন সমস্যা হবে না।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ