১৩ জুলাই, ২০২০ ১৯:৩১

ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপরে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপরে

উজানের ঢলে ও অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামে হু হু করে সব নদ-নদীর পানি নতুন করে আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই দিন যাবত এ পানি বাড়ছে। ২য় দফা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় নদ-নদী তীরের চর ও দ্বীপচরগুলো নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব এলাকার দেড় লক্ষাধিক মানুষ।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দ্রুতগতিতে নদ-নদীর পানি বাড়ছে এবং ভয়াবহ বন্যার দিকে এ জেলা যাচ্ছে। 

সোমবার দুপুর তিনটায় ওয়াপদার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার উপর এবং দুধকুমর নদীর নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে জেলায় ২য় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বানভাসি মানুষগুলো এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠায় পরিবার পরিজন নিয়ে উঁচু বাঁধ, স্কুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিচ্ছেন এসব বানভাসি মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে বাড়িতে থাকা হাঁস, মুরগি, গরু ছাগলসহ গবাদি পশু। পানিতে কাঁচা সড়ক ছাড়াও সদর উপজেলার মধ্যকুমরপুর এলাকায় পাকা রাস্তায় পানি উঠেছে। ফলে এখানকার বাজারে আসা মানুষজনের কষ্ট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। 

ওই এলাকার ছমিয়ন বেগম জানান, হামার বাড়িত বানের পানি উঠচে তাই বিয়ানীর বাড়িতে যাচ্ছি। ওমার বাড়ি উচা। পাহা আস্তাত পানি উটচে কষ্ট করি ছাগলকোনা ধরি যাবার নাগচং। যে কয়দিন পানি থাইকপে ওট্টে থাকমো। 

একবার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ২য় দফা বন্যায় নদী পাড়ের বন্যার্ত মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। তাদের এখন কষ্ট নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচল সংকট দেখা দিলে অনেকেই কলা গাছের ভেলা কিংবা ডিঙি নৌকো দিয়ে চলাচল করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

কয়েকদিন আগের বন্যার চেয়ে ২য় দফা বন্যার ভয়াবহতা নিয়ে বানভাসিরা খুবই আতংকে রয়েছে। জেলার সাড়ে ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলসমুহ প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী মানুষগুলো এখন দিকবিদিক শূন্য হয়ে পড়েছে। ১ম দফায় তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেলেও সেগুলো আবারও নিমজ্জিত হয়েছে। এবার নতুন কিছু ফসলের এবার সেসব ফসলের আশা আর তাদের নেই। দুই দফা বন্যায় অনেকেই ফসল ও হাস মুরগি গবাদি পশুসহ অনেক সহায় হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এখনও অনেক এলাকায় বানভাসিদের ত্রাণ হাতে না পৌঁছায় বন্যার্তরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। 

জেলা বন্যা ও ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, নতুন করে ৪শ মেট্টিক টন চাল ও ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। ইতোপূর্বে ৩০২ মেট্টিক টন চাল ও ৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা শুকনো খাবার বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণ করা হয়।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর