শিরোনাম
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৫:১৪

তরমুজের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে বারি

গাজীপুর প্রতিনিধি

তরমুজের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে বারি

দেশেই বীজ উৎপাদন সম্ভব এমন দুটি তরমুজের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা। বারির সবজি বিভাগ এবং আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র যৌথ উদ্যোগে জাত দুটি উদ্ভাবন করে। 

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত বিশুদ্ধ লাইন থেকে উদ্ভাবিত দুটি ওপি (ওপেন পলিনেটেড) জাতের একটির ভেতরে হলুদ এবং অপরটির ভেতরে টকটকে লাল। শিগগিরই এ দুটি জাত নিবন্ধনের মাধ্যমে মুক্তায়িত করা হবে বলে জানা গেছে। 

সোমবার সকালে দুটি জাতের গবেষণা মাঠ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং বারির মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বারির পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. মিয়ারুদ্দীন, পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন) ড. মো. কামরুল হাসান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম, সবজি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফেরদৌসি ইসলাম, জাত উদ্ভাবনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তারা। 

জাত উদ্ভাবনের সাথে সংশ্লিষ্ট বারির বিজ্ঞানীরা জানান, আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে যেসব উন্নতমানের তরমুজ পাওয়া যায় তার প্রায় সবই জাপান বা অন্যান্য দেশ যেমন-চীন, থাইল্যান্ড, ভারত থেকে আমদানিকৃত শংকর জাতের বীজ থেকে উৎপাদন করা হয়। ফলে তরমুজের বীজ আমদানি বাবদ প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। 

এছাড়া এসব জাতের বীজের বিশুদ্ধতা ও অঙ্কুরোদ্গম হার সব সময় ঠিক না থাকায় কৃষকরা প্রতারিত হয়ে থাকেন। কিন্তু বারি উদ্ভাবিত জাত দুটি থেকে কৃষক নিজেই বীজ উৎপাদন করতে পারবে। এদের ফলন, আকৃতি, স্বাদ ও মিষ্টতা প্রচলিত জাপানি শংকর জাতের চেয়ে উন্নতর। এছাড়া এ জাত দুটি বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী অমৌসুমী জাত হওয়ায় কৃষক এখান থেকে অধিক লাভবান হবে। 

হাইব্রিড জাত হিসেবে মুক্তায়িত হওয়ার পর ব্যাপক সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে বীজ আমদানি বাবদ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানো সম্ভব হবে এবং তরমুজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বারির সবজি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফেরদৌসি ইসলাম জানান, মার্কেটে যে তরমুজ আমরা দেখি তা মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে শুরু হয়। এখন অসময়ে, অমৌসুম বা অফ সিজনে আমরা মাঠে তরমুজ দেখছি। এ জাতটা যখন অবমুক্ত হবে তখন কৃষক লাভবান হবে একারণেই যে শতভাগ সে নিজে আবহাওয়া উপযোগী জাত পাবে। 

বারির মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সবজি বিভাগের বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তরমুজের হাইব্রিড এবং ওপি (ওপেন পলিনেটেড) জাত উদ্ভাবনের পথে আছি। হাইব্রিড তরমুজের বীজ আমরা দেশেই উৎপাদন করছি। যেহেতু এটা দেশে উৎপাদিত হচ্ছে-এই তরমুজ দেশের আবহাওয়ার জন্য উপযোগী। কাজেই আমাদের কৃষকদের প্রতারিত হওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। অপরদিকে আমরা যে ওপি জাত উদ্ভাবন করতে চলেছি এটাও কৃষক নিজে তার বীজ উৎপাদন করতে পারবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, সারা বছরই এখন তরমুজ পাওয়া যায়। তরমুজ চাষে বিঘা প্রতি হয়তো আমাদের খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কিন্তু আমরা দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভবান হতে পারি। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর