ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে সিরাজগঞ্জের নদীর তীরের ভাঙন কবলিত বাসিন্দাদের। কখন বিলীন হবে চিরচেনা বসতভিটা এনিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে সার্বক্ষনিক। কিন্তু ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশায় ভাঙন কবলিতরা। যমুনার পানি কমার সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের যমুনার অরক্ষিত অংশ ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ফসলি জমি। গৃহহীন ও বাস্তুহীন হয়ে পড়ছে শতশত পরিবার।
জানা যায়, বিগত চারমাস ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি-কমার সাথে সাথে নদীর পশ্চিম তীরবর্তী এনায়েতপুরের ছয় কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন শুরু হয়। অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতভিটা-ফসলী জমি-গাছপালা। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়ে পড়ছে মানুষ। খোলা আকাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেকে। বাপ-দাদার চিরচেনটা বসতভিটা-ফসল জমি হারিয়ে পথের ফকির হতে বসেছে অনেকেই। বিশেষ করে রাতের বেলায় ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তীদের। চৌহালীর ঘুশুরিয়া, চর বিনানুই, চর সলিমাবাদ এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ঘুসুরিয়া এলাকায় চারটি বসতবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সদর উপজেলার সিমলা এলাকায় ভাঙন আতঙ্কে স্থানীয় বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছে।
চৌহালীর ঘুসুরিয়া এলাকার আপন, কাওসার, আলহাজ্ব ও আব্দুল মতিন জানান, রাত তিনটার দিকে যমুনায় প্রবল ঘুর্নাবর্ত শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে আমাদের চারটি বসতবাড়ী ও আসবাবপত্র বিলীন হয়ে যায়। এতে আমরা চারটি পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।
এনায়েতপুর এলাকার ইয়াসিন ও রহম আলী জানান, ভাঙনের কারনে সবকিছু হারিয়ে দিশেহারা পড়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে কিন্তু কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর নিঃস্ব হয়ে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। অনেকে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। এবছর যেভাবে এনায়েতপুর এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অন্তত ২০টি গ্রাম, বহু স্থাপনা, তাঁতকারখানা, সড়ক, ফসলি জমি, রাস্তা ও হাট-বাজার বিলীন হয়ে যাবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ও টাঙ্গাইল পানি বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারনে যমুনার অরক্ষিত অ লে ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে। পানির প্রবল স্রোতে ও ঘুর্নাবর্তের পানি আকস্মিকভাবে ভাঙন শুরু হয়। অরক্ষিত অংশগুলো যাতে না ভাঙে সেজন্য স্থায়ী বাঁধের জন্য মন্ত্রালয়ে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। পাস হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ