সাভারে পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে কীটনাশক ছাড়াই সবজি চাষ করেছে কৃষকরা। এ বছরেই প্রথম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের (আইপিএম) আওতায় সাভার উপজেলার ভার্কুতা ইউনিয়নের ও সাভারে তেতুঁলঝোড়া গ্রামে বিষমুক্ত এ খাদ্য উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বছর জুড়ে বিষমুক্ত সবজি পাবে বলছেন উদ্যোক্তারা। আইপিএম পদ্ধতি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষক-কৃষাণীরা মাঠে সবজি উৎপাদনের ব্যস্ত দিন পার করছে। দিন-রাত মাঠে কাজ করছেন তারা। তাদের আবাদ করা ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো ও লাউ ক্ষেতে এক হাজার হেক্টর জুড়ে মাঠের পর মাঠ ভরে রয়েছে।
নিরাপদ সবজি চাষি আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তাদের উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি ইতিমধ্যে বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। এসব সবজির বেশিরভাগই মাঠে বসেই বিক্রি করছেন তারা। ভাল চাহিদা থাকায় পাইকারী ক্রেতারা গ্রাম থেকেই সবজি কিনে নিচ্ছে। এতে তাদের পরিবহন খরচও বেঁচে যাচ্ছে বলেন তারা।
ময়না বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। চারা রোপণের ৪ মাস পর ফলন ধরতে শুরু করেছিল। এই দুই মাসে সবজি হিসেবে ২০০ মণ গোল বেগুন বিক্রি করে পেয়েছেন ২০ হাজার টাকা। ১ বছর পর্যন্ত গাছ বেঁচে থাকলে তার আয় হবে অন্তত ৪ লাখ টাকা।
ভার্কুতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ভার্কুতা ইউনিয়নের সাড়ে ৫০ হাজার পরিবারের মধ্যে ৩০ হাজার পরিবারই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে সবজি চাষ করে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার, এসব সংসার চলে চাষের আয় থেকে। করোনার লকডাউন চলাকালে এসব সবজি চাষি তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পেরে পানির দরে বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বন্যা তাদের সর্বস্বান্ত করে দিয়ে গেল। আবাদ বিনষ্ট হওয়ায় এখানকার অনেক সবজিচাষি মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহম্মেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই করোনার মধ্যে কৃষি বিভাগ কৃষক-কৃষাণীদের প্রশিক্ষণ এবং উপকরণ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে। প্রতিটি দলে প্রশিক্ষিত ৩০ জন করে ২৫টি দল মাঠে এ ফসল উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।
নাজিয়াত আহম্মেদ আরও জানান, এ সবজি চাষে কোনো রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। জৈব সার এবং পোকা দমনে ফেরমেন, আঠালো ফাঁদ এবং জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করা হয়। বিষমুক্ত এ নিরাপদ সবজি সহজেই বাজারজাত করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচার করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা