লালমনিরহাটের সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণের চওড়া গ্রামে পাওনা টাকা আদায়ের ঘটনায় সালিশি বৈঠকে আব্দুল হালিম সরকার নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার তিস্তা নদীর চর হরিণের চওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল হালিম সরকার হারাগাছ থানার পাইকারটারী গ্রামের মৃত ছমছ উদ্দিনের ছেলে এবং মালা বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক।
নিহতের পরিবার জানায়, লালমনিরহাটের তিস্তার চর হরিনের চওড়া এলাকার মজিবরের কাছে তামাক বিক্রির ১৩ লাখ টাকা পেতেন দর্জিপাড়া গ্রামের চান মিয়া। প্রায় দেড়মাস আগে এ নিয়ে একবার বৈঠকও হয়। সেখানে ৫ জানুয়ারি টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন মজিবর। সে অনুযায়ী লিখিত অঙ্গীকারনামাও তৈরি করা হয়।
নির্ধারিত দিন অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেই টাকা আদায়ের জন্য চান মিয়া আব্দুল হালিম সরকারসহ আরও দু-তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে টাঙরীর বাজারে গেলে প্রতিপক্ষ মজিবর ও তার সমর্থক ফজলু এলফাত, রতন, ফজু এবং আরও ২০-২৫ জন যুবক তাদেরকে ধরে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের বাকবিতন্ডা হয়।
এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম সরকারকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হালিমকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতের ছেলে মোহন মিয়া বলেন, মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে সালিশি বৈঠক বসেছিল। বিরোধ মেটাতে সেখানে বাবাও ছিলেন। বৈঠকে বাবার তোলা একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু করে বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে হট্টগোল বন্ধে অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু ফজু ও ফজলু নামে দুজনসহ অনেকে আমার বাবাকে টার্গেট করে মারধর করতে থাকে। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাবার মৃত্যু হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ফজু ও ফজলু দীর্ঘদিন থেকে মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত। তারা লালমনিরহাট ও হারাগাছ এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
লালমনিরহাট সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম জানান, রাত ৩টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তামাক ব্যবসার পাওনা টাকার বিরোধ থেকে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
বিডি-প্রতিদিন/তাফসীর আব্দুল্লাহ