১৮ মে, ২০২১ ১৯:৪৩

ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে বগুড়া থেকে কর্মস্থলে ফিরছে শ্রমজীবী মানুষ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে বগুড়া থেকে কর্মস্থলে ফিরছে শ্রমজীবী মানুষ

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে বগুড়ার শেরপরসহ আশপাশের তিন উপজেলার কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকারি বিধি নিষেধ থাকায় দুরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও করোনা ঝুঁকি নিয়েই বিকল্প যানবাহনে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন তারা। এক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। কর্মস্থলগামী অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। মঙ্গলবার শহরের খেজুরতলাস্থ নতুন বাস টার্মিনাল ও ধুনটমোড় এলাকায় গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়।

সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেই ঈদের আগে যে যার মত করে নাড়ির টানে ঢাকা ছেড়ে বাড়ি আসেন। পুনরায় সেই করোনা ঝুঁকি নিয়েই ট্রাক, প্রাইভেট, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাসে ও পিকআপে করে ঢাকায় যাচ্ছেন। তবে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার অজুহাতে গলাকাটা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশকে জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেলার শেরপুর, নন্দীগ্রাম, ধুনটসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা শহর এবং গ্রামাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ শ্রমজীবী। জীবন-জীবিকার তাগিদে ঢাকায় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন তারা। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিক। করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে ঢাকায় কাজ না থাকার কারণে দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই বাড়ি ফিরেন। আবার অনেকের অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে আসেন। আর এসব অঞ্চলের মানুষ ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন।

একাধিক ব্যক্তি জানান, বাড়ি থেকে কর্মস্থল পর্যন্ত পৌঁছাতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। বাসে সিট নিয়ে ঢাকায় যেতে ৮০০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। আর ট্রাকে গেলে দিতে হচ্ছে জনপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা করে। একইভাবে মাইক্রোবাসে ১০০০-১২০০ টাকা ও প্রাইভেটকারে ১৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত ঢাকায় যেতে ভাড়া গুণতে হচ্ছে। সবমিলে অনেক গার্মেন্টস্কর্মী কর্মস্থলে যেতে ঋণ করতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানান তারা। 

টিকেট বিক্রেতা আজিজুল জানান, ঈদের পর থেকে এই টার্মিনাল থেকে মফিজ বাস অর্থাৎ কমদামি ব্যানারের বাস চলাচল শুরু করে। কিন্তু পথে পথে নানা বাধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তাছাড়া লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এজন্য ব্যাপক লোকসানের মুখে রয়েছেন। বছরের দু’টো ঈদে বাসের মহাজনরা কিছু টাকার মুখ দেখতে পান। তাই ঈদ পরবর্তী যাত্রীদের চাপ থাকায় দু-একটি বাস ঢাকায় যাচ্ছে। কারণ এসব এলাকার অসংখ্য মানুষ গার্মেন্টে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে তারা গ্রামে আসেন। এ সময় যাত্রীর তুলনায় বাসের মারাত্মক সংকট পড়ে। যে কারণে বাড়তি ভাড়া নেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না বলে জানান তিনি। 

কাউন্টার মাষ্টার সেলিম, আবু হানিফ জানান, বর্তমানে কমদামি ব্যানারের বাসের সিট ভাড়া ৭০০-৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ঈদের কারণে যাত্রীভরে বাসগুলো ঢাকায় গেলেও ফিরতে পথে ফাঁকা আসছে। যে কারণে একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হয় বলে তারা দাবি করেন।

হাইওয়ে পুলিশের শেরপুর গাড়ীদহ ক্যাম্পের ইনচার্জ বানিউল আনাম বলেন, সরকারি বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে কাজ করছেন তারা। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে পুনরায় কর্মস্থলে যাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। তাই এই মূহুর্তে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া গাড়িগুলো ঠেকিয়ে চেক করার সুযোগ নেই। কারণ একটি গাড়ি থামিয়ে দিলে শতশত গাড়ি আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর