ফরিদপুরের সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার পর এবার তাকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্তৃক হুমকি দেবার পর কলেজ শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিযোগে জানা গেছে, ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজের একাদশ শ্রেণির (ভকেশনাল) শিক্ষার্থী ইকবাল হাসান হিমেলকে মারপিট করে তার দামী একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন স্থানীয় রিপন মল্লিক নামের এক যুবক। গত ২৮ মে কলেজ শিক্ষার্থী হিমেল মাঠে খেলা করতে গেলে রিপন মল্লিক তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এতে বাঁধা দিলে রিপন মল্লিক হিমেলকে ইট দিয়ে মাথা ও মুখে আঘাত করে মারাত্বক ভাবে জখম করে। পরে বটি দিয়ে কোপাতে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দিলে মারাত্বক অঘটন থেকে বেঁচে যায় হিমেল। এ ঘটনায় হিমেলের বাবা সোনা মিয়া ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দেয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিপন মল্লিক কলেজ শিক্ষার্থী হিমেলকে অপহরণ করে নেবার হুমকি দেয়। এতে হিমেল ও তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। হিমেলের বাবা সোনা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, রিপন মল্লিক একজন সন্ত্রাসী। সে অস্ত্র মামলার আসামি হিসাবে জেল খেটেছে বহুদিন। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে রাতের বেলা ছিনতাই, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আমার ছেলের দামী মোবাইল ছিনিয়ে নেবার পর তাকে মারাত্বক ভাবে আহত করেছে। এখন সে হুমকি দিয়ে বলেছে, থানায় অভিযোগ কেন করেছি। এজন্য আমার ছেলেকে সে অপহরণ করে নিয়ে যাবে। এ ধরনের হুমকির কারণে আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
স্থানীয় মেম্বার মোতালেব শেখ জানান, রিপন মল্লিক একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী। মহাসড়কে রাতের বেলা ছিনতাই কাজে জড়িত। সে অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজীর অনেক অভিযোগ রয়েছে। জুয়ার সাথেও জড়িত রয়েছে। তার এসব নানা অপকর্মের কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় মাদক আর মোবাইল গেমসের মাধ্যমে জুয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজীর ঘটনা বেড়েছে। প্রশাসন এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পরিনতি ভয়াবহ হতে পারে।
এদিকে, রিপন মল্লিকের সাথে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, কলেজ শিক্ষার্থী হিমেল মোবাইল গেমসের জুয়ার সাথে জড়িত। সে এলাকার তরুণদের বিপদগামী করছে। সে আমার ছোট ছেলেকেও মোবাইল গেমসে আসক্ত করেছে। আমি তাকে নিষেধ করার পরও সে তার কাজ অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার দিন আমি হিমেলকে বকাঝকা করি। পরে তাকে ধরতে গেলে আমি তার গায়ের উপর পড়ে যাই। এতে সে ইটের আঘাতে আহত হয়। আমি তাকে অপহরণ কিংবা কোন হুমকি দিইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ জানায়, কলেজ শিক্ষার্থী হিমেলের বিষয়ে তার বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল