ফরিদপুর-৩ আসনের (সদর) সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় যুবদলকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ফরিদপুর জেলা ও মহানগর যুবদল। সংবাদ সম্মেলন শেষে যুবদলের একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এ কে আজাদসহ পতিত আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজারে ২০২৪ সালের শেখ হাসিনার পাতানো ডামি নির্বাচনের স্বতন্ত্র এমপি এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় যুবদলের কারো সম্পৃক্ততা ছিলো না। কিন্তু এ কে আজাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই ঘটনায় যুবদলকে জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় ভিত্তিহীন বক্তব্য দেন। এরপর বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এটি সারা দেশে যুবদলের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করার অপপ্রয়াসের একটি অংশ। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা যুবদলের বিরুদ্ধে এই পরিকল্পিত তথ্য সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
এ সময় যুবদলের নেতাকর্মীরা এ কে আজাদ এর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হাসান, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম ইউসুফ, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজাওয়ান বিশ্বাস তরুণ, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি জাহিদুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক মো. নাসির খান, কোষাধক্ষ্য ইলিয়াস মোল্লা, মৎস্য ও প্রাণীবিষয়ক সম্পাদক গালিব ইবনে হান্নানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ১৯ অক্টোবর ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজারে শেখ হাসিনার ডামি নির্বাচনের স্বতন্ত্র এমপি এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তার নিজের মিডিয়াসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাধারণ জনমনে ছাড়াও দলের নেতাকর্মী ও সমর্থনের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ওইদিনের ঘটনার সাথে ফরিদপুর জেলা যুবদলের কোনো নেতাকর্মী বা কোনো ইউনিটের নেতৃবৃন্দের সংশ্লিষ্টতা নেই, তারা কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিতও ছিলেন না, যা ওইদিনের ঘটনায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজেই পরিষ্কার রেকর্ড রয়েছে। বরং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কে আজাদ যুবদলকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেই বক্তব্য দিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি যে, ওই ঘটনায় জেলা যুবদলের ন্যূনতম সম্পৃক্ততা নেই, সেখানে যুবদলের নেতৃবৃন্দের কোনো উপস্থিতি বা সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তাছাড়া ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে যুবদলের কোনো সংগঠনিক কমিটি নেই।
তিনি বলেন, ওইদিন জনরোষের শিকার হয়ে এ কে আজাদ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির মুখে ওই স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন। কারণ এ কে আজাদের গাড়িবহরের সাথে পতিত আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত মামলার আসামিদের দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তখন তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকলে পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের শক্তিতে বলিয়ান একটি রাজনৈতিক দল। জনগণই আমাদের ক্ষমতার একমাত্র উৎস। নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান আইন মেনে যে বা যারাই মাঠ পর্যায়ে তাদের তৎপরতা চালাবে, গণতান্ত্রীক দল হিসেবে তাদের কর্মকাণ্ডকে আমরা স্বাগত জানাই এবং শ্রদ্ধাশীল। কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা সংগঠনের প্রতি প্রতিহিংসাবশত কোনো তৎপরতায় আমরা বিশ্বাসী নই কিংবা কখনো সমর্থনও করি না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফরিদপুরের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে এবং আগামীর গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ট ও নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে যুবদল।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে যুবদলের একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন তাবিজ ছাড়াও যুবদলের নেতৃবৃন্দএ কে আজাদসহ আওয়ামী দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ