বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় আটদিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনেও পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা মোংলা শহরের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন ও লোকজন ঢুকতে দিচ্ছে না। কাঁচা বাজার, মুদি, মাছ-মাংস বাদে বাকি সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ক্রমেই বাড়ছে। তিনদিনে ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোংলায় শতকরা আক্রান্তের হার ৭৩.৮০ ভাগ। মোংলায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হয়েছে কিনা তা শনাক্তে গত দুইদিন আইইডিসিআরের প্রতিনিধি নমুনা সংগ্রহ করেছে।
মোংলায় কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মোংলা পৌর এলাকার করোনা শনাক্ত হওয়া ১৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে। মোংলা পোর্ট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে মোংলা বন্দর ও শিল্পাঞ্চলসহ ইপিজেডে পুরোদমে কাজ চলছে।
মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক থাকায় নৌপথে দেশের বিভিন্ন নদী বন্দরে নৌযানে করে মালামাল পরিবহন চলছে। এসব নৌযানের স্টাফরাও মোংলাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবাধে চলাচল করছে। মোংলা দিয়ে ভারতেও কার্গো, কোস্টারের যাতায়াত রয়েছে। ভারতগামী নৌযানের স্টাফরাও কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়া মোংলায় অবস্থান ও চলাফেরা করে আসছে। এখানে করোনা স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় সকাল থেকে পৌরসভায় কুরআন খতম ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান। কুরআন খতম ও সকলকে বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. একেএম হুমায়ুন কবির বলেন, মোংলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এরই মধ্যে সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোংলা পৌর এলাকা পরিদর্শন করবে। জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা শেষে মোংলা উপজেলা জুড়ে সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মোংলায় আগত ভারতগামী নৌযানের ক্ষেত্রে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে ঝুঁকির বিষয়টি নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই