বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সেবা দিচ্ছে কলেজ ছাত্র শুভ কর্মকারের তৈরি রোবট ‘সেবক’। সোমবার শুভ কর্মকার, তার উদ্ভাবিত রোবট ‘সেবক’ রোগীদের সেবার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দান করেন। ওই দিনই রোবটের রোগী সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাশেম। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কলেজছাত্র শুভ কর্মকারের উদ্ভাবিত রোবট ‘সেবক’ নানাভাবে রোগীকে সাহায্য করতে পারবে। ওই দিনই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুন তার অফিস কক্ষ থেকে রোবট ‘সেবক’ এর মাধ্যমে সরাসরি রোগীর সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করেন। ডাক্তার যত দূরে থাকুক তার নির্দেশনা মেনে রোগীর সেবা নিশ্চিত করবে এই রোবট। রোগীর অক্সিজেন সেচুরেশন কমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অক্সিজেন উৎপাদন করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে এই রোবট। একই সঙ্গে ওষুধ আনা-নেয়া, অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেয়া, রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ সরবরাহ করা, সংক্রামিত রোগীর বর্জ্য ইউভি রশ্মির মাধ্যমে জীবানুমুক্ত করতে পারছে এই রোবট।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, তরুণ উদ্ভাবক শুভ কর্মকারের উদ্ভাবিত রোবট ‘সেবক’ ডাক্তার এবং রোগীর যোগাযোগের একটি মাধ্যম হয়ে কাজ করতে পারবে। ‘সেবক’ সরাসরি রোগীর কাছে যেতে পারবে। তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সঙ্গহীন রোগীকে সঙ্গ দিতে পারবে। ইন্টারনেটের সহায়তায় ‘রোবট’ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দূর দূরান্ত থেকেও রোগীর সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষন, রোগীর সাথে কথপোকথন এবং ব্যবস্থাপত্রও দিতে পারবেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম বলেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে ভিডিও কলে ডাক্তার এবং রোগী কথা বলতে পারেন। কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছে কেউ সহসা যেতে চান না। এক্ষেত্রে রোবট ‘সেবক’ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। রোগীর অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে রোগীকে অক্সিজেন সরবারহ করতে পারবে। এছাড়াও রোগীর বর্জ্য রোবট সেবকের শরীরে থাকা ডাস্টবিনে ফেলা হলে ইউভি রশ্মির মাধ্যমে তা জীবানুমুক্ত করে ফেলবে। এতে সংক্রমনের ঝুঁকি কমবে। রোবট ‘সেবক’ বানিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হলে চিকিৎসকরা নিরাপদ দূরত্বে থেকে রোগীর চিকিৎসা দিতে পারবেন।
এতে রোগী তার প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন, অন্যদিকে চিকিৎসকও নিরাপদে থাকতে পারবেন। তরুণ উদ্ভাবকের এই আবিস্কারে গর্বিত উপজেলা প্রশাসন। করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায় আবিস্কৃত রোবটে আরও উন্নত প্রযুক্তির সমহার ঘটাতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন