নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ৬ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপকে লোহার খাঁচা থেকে উদ্ধারের পর বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকালে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সাপটিকে উদ্ধারের পর দুর্গাপুর সদরের একটি বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর আগে, উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের পাইকড়া গ্রাম থেকে অজগরটিকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দুই মাস পূর্বে পাইকপাড়া গ্রামের পাশেই লক্ষ্মীপুরের পাহাড়ী ঝরনা ছাড়ার বিলে স্থানীয় রাখাল ও কৃষকরা একটি অজগর সাপ দেখতে পায়। পরে তারা সেটিকে মারার জন্য পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনা দেখে স্থানীয় বাসিন্দা ফৌজদার মিয়া অজগরটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। সাপটিকে তিনি রাখার জন্য তৈরি করেন একটি লোহার খাঁচা। এরপর থেকে তিনি দীর্ঘ দুই মাস ধরে তার বাড়িতে রেখে অজগরটি লালন পালন করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংবাদে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পুলিশ, বনবিভাগ ও স্থানীয় বন্যপ্রাণি রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং'-এর সদস্যরা তার বাড়ি থেকে অজগরটিকে উদ্ধার করে।
পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অজগরটিকে নিয়ে আসলে অবমুক্ত করার জন্য বনবিভাগ ও 'সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং' সংগঠনের কাছে হস্তান্তর করেন ইউএনও। পরবর্তীতে অজগরটিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের পাহাড়ি ঘন জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়।
বন্যপ্রাণি রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'সেভ দ্য এনিমেলস অফ সুসং' এর সভাপতি রিফাত আহমেদ রাসেল জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাওয়ার পরপরই প্রশাসনকে এ ব্যাপারে অবগত করি। প্রশাসনের সহযোগিতায় বনবিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা চন্ডিগড় ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অজগরটি উদ্ধার করি।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় রাখাল ও কৃষকরা অজগরটিকে পিটিয়ে আহত করলে স্থানীয় এক যুবক এটিকে বাঁচিয়ে সযত্নে লালন পালন করছিলেন। তবে বন্যপ্রাণি পালনের কোন বিধান না থাকায় আমরা তার সাথে কথা বলে সাপটিকে উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দিয়ে আসি ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব উল আহসান জানান, একটি অজগরকে আটকে রাখার সংবাদ পেয়েই সেটিকে উদ্ধারের দিক নির্দেশনা দেই। পরে তারা সাপটিকে সুস্থভাবে উদ্ধার করে নিয়ে আসলে আবারো বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের কাছে হস্তান্তর করি।
এসময় তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত চার মাসে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বেশকিছু বন্যপ্রাণি উদ্ধার করেছে স্বেচ্ছাসেবক ও বনবিভাগের কর্মীরা ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত