দুই বছর আগে সর্বশেষ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সুপার ফোরে খেলেছিল বাংলাদেশ। সুপার ফোরে দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়েছিল ৬ রানের ব্যবধানে। তার আগের টি-২০ আসরে আবার গ্রুপ পর্বের ব্যারিয়ারই টপকাতে পারেনি। অথচ এশিয়া কাপে তিনবার ফাইনাল খেলেছে। ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে ফাইনাল খেলেছিল। রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। আগামীকাল টি-২০ এশিয়া কাপ খেলতে আবুধাবি যাবেন লিটনরা। টাইগাররা ঢাকা ছাড়বেন দুই ধাপে। এবার মরুরাজ্য আমিরাতে লিটন বাহিনী যাচ্ছে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে। বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত এবং দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থাকার পর শিরোপা জেতা কঠিন। তারপরও আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক লিটন। তবে সরাসরি শিরোপা জয়ের কথা না বলে আসরে ভালো খেলার প্রত্যাশা প্রকাশ করেন, ‘এশিয়া কাপে ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। ক্রিকেট খেলার ওপরে তো আর কিছু নেই। ভালো খেললেই জেতা যাবে।’
আট দলের এশিয়া কাপ শুরু ৯ সেপ্টেম্বর। আগামী বছর টি-২০ বিশ্বকাপ। তার প্রস্তুতিতেই এবার টি-২০ ফরম্যাটে হবে এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপে। বাকি তিন দল শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং। ম্যাচগুলোর ভেন্যু আবুধাবি। লিটন বাহিনীর প্রথম ম্যাচ ১১ সেপ্টেম্বর হংকং, ১৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ও ১৬ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আসরের ফাইনাল ২৮ সেপ্টেম্বর।
অন্য যে কোনো আসরের চেয়ে এবারের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। আসরকে ঘিরে এক মাস ধরে অনুশীলন করছেন লিটনরা। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে অনুশীলন শুরু করেন টাইগাররা। প্রথমে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে। সেখানে ফিটনেসটাই মূল ছিল। এরপর সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্কিল অনুশীলন করেন। সর্বশেষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলেন লিটনরা। প্রথম ম্যাচ ৮ উইকেট, দ্বিতীয় ম্যাচ ৯ উইকেটে জেতে। তৃতীয় ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। টানা তিন সিরিজ জয়ের পর আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন ক্রিকেটাররা। ব্যাটিং ও বোলিং দুটোই ভালো হয়েছে টাইগারদের। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামার আগে প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি ঝরেছে অধিনায়ক লিটনের মনে, ‘সব মিলিয়ে সব দিক থেকেই আমার মনে হয় ইতিবাচক। যারাই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে, ভালো ক্রিকেট খেলেছে। অনুশীলন তো গুরুত্বপূর্ণ, এর চেয়েও বড় ব্যাপার ম্যাচে আপনি কতটা ডেলিভার করতে পারছেন। ম্যাচ খেললে উন্নতি হয়, গেম সেন্স বাড়ে। ক্রিকেটাররা এখন আত্মবিশ্বাসী। আমার মনে হয়, আমরা খুব ভালোভাবেই প্রস্তুত এশিয়া কাপের জন্য। আমরা যে ক্যাম্পটা করেছি, সেটা শুধু এ সিরিজের জন্য নয়, সামনে যত খেলা থাকবে, সেসবের জন্যও আমরা প্রস্তুত। কারণ এত ভালো ক্যাম্প আমি কখনো দেখিনি। ফিটনেস তো মিরপুরে থেকেও করা যায়। কিন্তু যে ধরনের ক্রিকেট আমরা খেলতে চাচ্ছি, যে ধরনের অনুশীলন আমরা করতে চাচ্ছিলাম, সেটা সিলেটেই একমাত্র পাওয়া গেছে।’
এশিয়া কাপের দলটিতে কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার নেই। ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ নেই। তিন ফরম্যাটের সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নেই। ফিরেছেন ২ বছর ১০ মাস পর নুরুল হাসান সোহান ও ২ বছর পর ফিরেছেন সাইফ হাসান। দুই বছর পর ফিরেও ভালো খেলেছেন সাইফ। সোহানও ভালো করেছেন। অধিনায়ক লিটন রয়েছেন দুরন্ত ফর্মে। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৫৪ রানের পর তৃতীয় ম্যাচে করেন ৭৩। ১১০ টি-২০ ক্যারিয়ারে লিটন ১৪টি হাফ সেঞ্চুরি করে টপকে গেছেন সাকিব আল হাসানকে। সাকিবের হাফ সেঞ্চুরি ১৩টি। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর দুর্দান্ত বোলিং করেছেন।