অবশেষে ১৫ দিন পর আটক করা গেছে পদ্মার তীরবর্তী খালে আটকা পড়া কুমরিটিকে। ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী সালাম খা’র ডাঙ্গীতে অবস্থিত একটি খালে আটকা পড়া কুমিরটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে স্থানীয়রা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন কুমিরটিকে জাল দিয়ে আটক করে। পরে গ্রামবাসীর সহায়তায় কুমিরটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। কুমির উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক। ধরা পড়া কুমিরটি ৫ হাত লম্বা। কুমিরটিকে উদ্ধারের পর স্থানীয় বনবিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন কুমিরটি দেখতে।
স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী ৩৮নং দাগ এলাকার সালাম খার ডাঙ্গীতে গত ২৫ জুলাই কুমিরটিকে দেখতে পান কয়েক জেলে। সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের জেলে হজরত মিয়া পদ্মা নদী থেকে আনুমানিক চার কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরেন। মাছটি তাজা রাখার জন্য মাছের মুখে দড়ি বেধে জলাশয়ের মধ্যে চুবিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মাছটি তুলে আনার জন্য দড়ি ধরে টান দিলে কুমিরটি দেখতে পান।
এলাকাবাসী জানায়, পদ্মা নদী থেকে একটি সরু চ্যানেল ওই জলাধারের কাছে গেছে। এর মধ্যে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় চ্যানেলের পানি শুকিয়ে যায়। এলাকাবাসী বলেন, ধারণা করা হয় কোন মাছ তাড়া করতে করতে এ জলাধারে এসে আটকা পড়েছে।
কুমিরটি দেখার পর ওই এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় পুরাতন মোহন মিয়া হাট জামে মসজিদ থেকে এলাকায় সেই সময় মাইকিং করা হয়। ওই জলাধারে যাতে কেউ না নামেন সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। এলাকাবাসীকে সচেতন টানানো হয় সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। এরপর দুই দফায় খুলনা থেকে বনবিভাগের কর্মীরা কুমিরটিকে ধরার চেষ্টা চালান। কিন্তু প্রতিবারই কুমিরটি জাল ছিড়ে বেড়িয়ে যায়। ফলে কুমিরটি ধরা থেকে তারা বিরত থাকে।
ফলে স্থানীয় চরবাসীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছিল। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জলাধারে থাকা কয়েকটি হাসকে তাড়া করে কুমিরটি। বিষয়টি স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে জাল দিয়ে কুমিরটিকে আটক করার চেষ্টা চালায়। শাহজাহান মোল্যা, আলম, দুলাল, বেনজু বেপারী, হানিফ, শাহিন, হবি মোল্যা, মুন্নাফসহ কয়েকজন প্রথমে জাল দিয়ে দফায় দফায় চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে তাদের জালে জড়িয়ে যায় কুমিরটি। পরে গ্রামবাসীরা খবর পেয়ে এগিয়ে আসে। গ্রামবাসীর সহায়তায় কুমিরটিকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে কুমিরটিকে দড়ি দিয়ে মুখ, লেজ বেঁধে রাখা হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটির দৈর্ঘ্য ৫ হাত। কুমিরটির বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও বনবিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে কুমিরটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। এদিকে, কুমিরটিকে আটকের খবর পেয়ে তা দেখতে ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছেন শত শত লোকজন। কুমিরটি আটকের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন