দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আটকে আছে ৫০০ এর ও বেশি আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যবাহী ট্রাক। এতে স্থলবন্দর সংলগ্ন বাংলাবান্ধা-তেঁতুলিয়া জাতীয় মহাসড়কে সাত কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লেগে আছে তীব্র যানজট।
এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ট্রাক চালক, শ্রমিক, ব্যাবসায়ী, পথচারীসহ স্থানীয়রা। আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। এলসি চালান জটিলতা ও বন্দর ইয়ার্ডে জায়গার অভাবে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। আমদানি পণ্য খালাস এবং রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ট্রাক দ্রুত পাঠাতে না পারায় ট্রাকগুলো আটকে গেছে। এসব ট্রাকে পোল্ট্রি ফিটসহ বিভিন্ন পণ্য ভারতের ফুলবাড়ি হয়ে নেপালে রপ্তানির কথা। এতে বিপাকে পড়েছেন আমদানি রপ্তানিকারসহ ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা। বিশেষ করে চরম দুর্ভোগে মানবেতর দিন পার করছেন আটকে পড়া ট্রাক চালকরা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ট্রাক ড্রাইভার আলম হোসেন জানান, দশ দিন থেকে স্থলবন্দরে পড়ে আছি। এখানে থাকার কোন যায়গা নেই। মালামাল নিয়ে নেপাল যাবো। এখন রপ্তানীকারক ফোন ধরে না। সিএন্ড এফ এজেন্টও কোন দায়িত্ব নেয় না। মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। পরিবারের সাথে যোগাযোগও করতে পারছি না। টাকা পয়সাও শেষ হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন আমদানি রপ্তানী বেড়ে যাওয়ার কারণে বন্দরে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, বন্দরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আমদানী রপ্তানী কার্যক্রম। সেই তুলনায় বন্দরের জায়গা সংকটের কারণে এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। একই ভাবে ভারতীয় ফুলবাড়ি স্থলবন্দরে নেপালের জায়গা বরাদ্দ কম থাকায় নেপালগামী পণ্যবাহি ট্রাকগুলো সময়মতো সীমান্ত পার হতে পারছে না। এজন্য রাস্তায় যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ল্যন্ডপোর্ট লিমিটেডের কর্তৃপক্ষরা অভিযোগ করে বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং সিএন্ড এফ এজেন্টরা ছাড়পত্র নিয়ে জটিলতা করছেন বলেই এই যানজট।
বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরতি-খুদা-মিলন জানান, আমদানি রপ্তানী বেড়েছে। বন্দরের জায়গাও কম। তাই এই যানযট। অচিরেই বাংলাবান্ধা তেতুলিয়া মহসড়কটি ৬ লেন হিসেবে নির্মাণ করা দরকার। বন্দরের যায়গাও বাড়ানো দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর প্রচুর সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর। ইদানিং এই বন্দরে আমদানি রপ্তানী কার্যক্রম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। যানজট নিরসনে আনসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অস্থায়ী ট্রাক স্ট্যান্ড বসানোর উদ্যোগ নেয়ার জন্য আলোচনা চলছে। জমি অধিগ্রহণের পক্রিয়া চলছে। রাস্তাটি চারলেন করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই কাজগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের সমস্যাগুলো কেটে যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন