১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:৪৭

পরকীয়ার জেরে যুবক খুন; তিন বন্ধু গ্রেফতার

গাজীপুর প্রতিনিধি


পরকীয়ার জেরে যুবক খুন; তিন বন্ধু গ্রেফতার

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের বিরোধের জেরে গলায় রশি বেঁধে গজারী বনে গাছের ডালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এক যুবককে তার বন্ধুরাসহ ওই প্রেমিকা খুন করেছে। চাঞ্চল্যকর এ খুনের প্রায় ১৪ মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

গ্রেফতারকৃতরা হলো গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন রাজাবাড়ি ইউনিয়নের পাবুরিয়াচালা এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে মো. রানা (২২), একই গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে মো. হেলাল (৪৫) ও মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মো. কাওছার (২৩)। 

পিবিআইএর ওই কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ১০ জুলাই দুপুরে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী স্কুল মার্কেটে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় শ্রীপুর থানাধীন পাবুরিয়াচালা এলাকার জমির আলীর ছেলে রাসেল (১৯)। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। একপর্যায়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর স্থানীয় শহুরের টেক গজারী বনের ভিতর গজারি গাছের সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো রাসেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পচন ধরা ওই লাশটির পুরো শরীরে পোকায় খাওয়া ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার কথা উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

তিনি জানান, শ্রীপুর থানা পুলিশ মামলাটি প্রায় ৫ মাস তদন্ত করে। তদন্তে কোন রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করতে না পারায় ঢাকা পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআইএর তদন্তকালে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত আসামি রানা, হেলাল ও কাওছারকে পাবুরিয়াচালা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা রাসেল হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গতকাল তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় ১৪ মাস পর চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। 

গ্রেফতারকৃতরা জানায়, ভিকটিম রাসেলের সঙ্গে এক প্রবাসীর স্ত্রীর (ফরিদের স্ত্রী নাদিরা) সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে রাসেলের ঘনিষ্ট বন্ধু রানার সঙ্গেও ওই নারীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। এ নিয়ে রাসেল ও রানার সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। রানা এই সুযোগে ওই নারীর দেবর কাওছারকে রাসেলের সঙ্গে ভাবীর (কাওছারের) পরকীয়া প্রেমের ঘটনাটি জানায়।

পরবর্তীতে পরিবারের মান সম্মানের কথা বিবেচনা করে রানা ও হেলালের সঙ্গে বসে রাসেলকে হত্যার পরিকল্পনা করে কাওছার। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই প্রবাসীর স্ত্রী মোবাইল ফোনে রাসেলকে পার্শ্ববর্তী শহুরেটেক গজারী বনে ডেকে নেয়। সেখানে রাসেলের সঙ্গে রানা, হেলাল ও কাওছারের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা রাসেলের গলায় রশি বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে লাশটিকে মাটিতে বসিয়ে গলায় বাঁধা রশির একটি মাথা গাছে ঝুলিয়ে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন  

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর