লক্ষ্মীপুরে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানাতে অপেক্ষা করার সময় যুবলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে জেলা যুবলীগের পদ প্রত্যাশী সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম বাবর, জেলা যুবলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপুসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়ক এলাকার বাগবাড়ী ও জেলে পল্লী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বর্ধিত সভাকে ঘিরে পদ প্রত্যাশী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক অন্তত ১০ জন নেতা প্রার্থিতা ঘোষণা করে নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরে বিলবোর্ড, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। শহরের সোনার বাংলা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আজ দুপুরে এ সভার আয়োজন করে জেলা যুবলীগ।
এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় নেতাদের বরণ করতে দুপুর ১২টা থেকে পদ প্রত্যাশীরা নিজ নিজ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। এসময় জেলা যুবলীগ সভাপতি টিপু ও সাধারণ সম্পাদক নোমান নেতাদের বরণ করতে ওই সড়কে তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার পথে জেলা যুবলীগের শীর্ষ পদ প্রত্যাশী রুপম ও বাবর সমর্থকদের মধ্যে পৃথক (বাগবাড়ী ও জেলে পল্লী এলাকায়) সংঘর্ষ বাধে।
এতে জেলা যুবলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপু, পদ প্রত্যাশী নুরুল আজিম বাবর, রুপম, কর্মী মনির হোসেন, জামাল, মামুন, খোরশেদ, সবুজ, আব্দুল হাশিমসহ ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টিপু প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সভায় যোগ দেন বলে জানা যায়।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিন দুপুর ২টা থেকে বর্ধিত সভা শুরু হয়। সভায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈমসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অতিথি হিসেবে অংশ নেন।
জানতে চাইলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত বাবর অভিযোগ করে বলেন, জেলা যুবলীগ সভাপতি টিপু ও সাধারণ সম্পাদক নোমান তার কর্মী সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাকেসহ তার ১০ জন সমর্থককে মারধর করা হয়। এদিকে জেলা যুবলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলীয় সমর্থকদের ভেতরে বিএনপি জামায়াত ঢুকে বিশৃঙ্খলতা দেখাতে গেলে আমরা সিনিয়ররা তা চিহ্নিত করতে গেলে তিনিসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। দলীয় কোনো গ্রুপিং নেই বলেও দাবী করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি তদন্ত শিপন বড়ুয়া জানান, বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগমে কিছু বিশৃঙ্খলতা (হাতাহাতি) হয়েছে। কোনো সংঘর্ষ হয়নি। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর টিপুকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন বছরের জন্য কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর নানা বিতর্কে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর