প্রবল বৃষ্টি ও ঝড় বয়ে যাচ্ছে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায়। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস বাঁধ সড়কটি আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় ভেঙে গেছে। এতে রংপুর-বড়খাতা মহাসড়কের যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড রেড অ্যালার্ট (লাল সংকেত) জারি করে তিস্তার আশপাশের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তিস্তার পানি বাড়ায় বুধবার ভোর থেকে লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধান ও ভুট্টাক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এতে তিস্তাপারের প্রায় ৫শ' পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তিস্তা শুকিয়ে জেগে উঠেছিল চর। হঠাৎ তিস্তার পানিতে সব ডুবে গেছে। কার্তিক মাসে এমনভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে। বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার দুপুর ১২টায় ৫৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে।
এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলা ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও পানিবন্দি ১৫ হাজার পরিবার।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, অত্র ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছে প্রায় ৫টি পরিবার।
সিংঙ্গীমারী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বাঁধ ভেঙে গেলে হাতীবান্ধা শহরে পানি প্রবেশ করলে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যরাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তিস্তাপাড়ের মানুষদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়া পরিবারগুলোর খোঁজখবর সার্বক্ষণিক রাখা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির
