আগামী ২ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন নৌকার প্রার্থী মোখলেসুর রহমানকে হারাতে বিএনপি’র একাংশের সাথে হাত মিলিয়েছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি পৌর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটিতে পদ-পদবি বঞ্চিত নেতা-কর্মীরাও বিদ্রোহী প্রার্থী সামিউল হক লিটনের পক্ষে গোপনে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সর্বোপরি নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করছে মরিয়া হয়ে দল বেধেছে আওয়ামী লীগের পদ-পদবি বঞ্চিত একটি অংশ।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ মোখলেসুর রহমানকে। কিন্তু গত নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে দলের একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ রয়েছে। কারণ কমিটিগুলো তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে গঠন করা হয়েছে। এতে পদ-পদবী বঞ্চিত নেতারা তখন থেকেই ক্ষুব্ধ রয়েছে। এনিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করেছে, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এছাড়া অতিসম্প্রতি পৌর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বিপুল অর্থ ব্যয় করেও নেতৃত্বে আসতে না পারা কতিপয় নেতা মনোকষ্টে ভুগছেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কৌশলে কাজ করছেন।অপরদিকে, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় এক নেত্রীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন গোপনে যোগাযোগ করে তার আশ্বাস পেয়ে পুরোদমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে ওই নেত্রীর পরিবারের সাথে সামিউল হক লিটনের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক থাকায় তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই নির্বাচনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোঃ হারুনুর রশিদ হারুন সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোঃ নজরুল ইসলাম ছাড়াও জামায়াতের মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন। তবে বিএনপি নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম জোরকদমে প্রচারণা চালালেও জামায়াত নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলের তেমন প্রচারণা চোখে পড়ছে না। যদিও একটা কথা প্রায়ই শোনা যায় জামায়াতের ভোটাররা নিরব থাকলেও তারা তাদের প্রার্থীকেই ভোট দেয়।
নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মোঃ মোখলেসুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনা সংকট চলাকালে প্রায় ৪০হাজার মানুষকে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা ছাড়াও সম্প্রীতির অংশ হিসেবে প্রতি ঈদ ও পুজায় মুসলমান এবং হিন্দুদের উপহার সামগ্রী পৌছে দিয়েছি। তাই দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তুষ্ট হয়ে তাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন করতে হলে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। কারণ দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের কেউ মেয়র নির্বাচিত হতে না পারায় পৌরসভার দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। বরং সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সকল নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পৌরবাসী।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন বলেছেন, গত নির্বাচনে তিনি পরাজিত হবার পর থেকেই মাঠে রয়েছেন। কিন্তু দল তাকে মূল্যায়ন না করলেও সাধারণ মানুষের ভালবাসা নিয়ে তিনি এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন