প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মনির হোসেন নিজেই তার প্রাক্তন প্রেমিকা ছুমাইয়া আক্তারকে (১৬) শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত ও জবাই করে হত্যা করে। প্রেমিকার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আত্মহত্যার জন্য মনির নিজের শরীরের বিভিন্ন স্থানে তার ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে।
পরে পুলিশ নিহত ছুমাইয়া আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ও পাশেই প্রেমিক রনির পেট থেকে নাড়িভুড়ি বের হওয়া আহত, অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ছুমাইয়া হত্যার প্রধান আসামি মনিরকে র্যাব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে মনির চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
টাঙ্গাইল র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বুধবার সকাল ৭টার দিকে মনির তার সাবেক প্রেমিকা ছুমাইয়াকে কৌশলে ডেকে এলেঙ্গা পৌর এলাকার খোকনের বাসার সিঁড়ি কোটার সামনে ছুরিকাঘাত ও জবাই করে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার জন্য হত্যায় ব্যবহৃত একই ছুরি দিয়ে নিজের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা দুইজনকেই মৃত ভেবে কালিহাতী থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ছুমাইয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এসময় মনির জীবিত ছিল। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় মনিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার ১০ ঘন্টার মধ্যে টাঙ্গাইল র্যাব তদন্ত করে জানতে পারে আহত মনির নিজেই ছুমাইয়ার হত্যাকারী। মনির হোসেনের সাথে ছুমাইয়ার দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত দুই মাস আগে তাদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়।
এ কারণে মনির ছুমাইয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়। ছুমাইয়াকে হত্যার জন্য মনির মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধান্ত নেয়। মনির কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। তিনি বাস চালকের সহকারি। আর নিহত ছুমাইয়া একই উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসুর রহমানের মেয়ে। পরিবারসহ এলেঙ্গা পৌরসভার রিসোর্ট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। সে এলেঙ্গা রানী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ঘটনাস্থলে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত যে ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি মনির হোসেনের। মনির টিকটকের প্রতি আগ্রহ ছিল। মাঝে মধ্যে সে টিকটকে উদ্ধার হওয়া সেই ছুরিটি ব্যবহার করেছে। এছাড়া র্যাবের কাছে বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে যা দেখে এই হত্যাকান্ডের সাথে মনির নিজেই জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মনির ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে মনিরের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ