ঢাকার ধামরাইয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমভাগ, বালিয়া, গাংগুটিয়ার, রোয়াইল ইউনিয়নের পর শনিবার রাতে ও রবিবার সকালে সূয়াপুর ও নান্নার ইউনিয়নে নৌকার কর্মী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী হাফিজুর রহমান সোরাবসহ উভয় পক্ষের ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো ও সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতেই সূয়াপুর বাজারে ও ন্নানার ইউনিয়নের গোপালকৃষ্ণপুর এলাকায় নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় এলাকায় চরম আতংক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের সুয়াপুর ইউনিয়নে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দিনের সমর্থকরা শনিবার সুয়াপুর বাজারে ভোট চাইতে গেলে এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান সোহরাব তার কর্মীদের নিয়ে অর্তকিতভাবে হামলা চালায়। এসময় সুয়াপুর মোড়ের নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পও ভাঙচুর করা হয়।
এক পর্যায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে নৌকার প্রার্থী কফিল উদ্দিনের বড় ছেলে আব্দুল হালিমসহ তার কর্মী মমিন মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, রাহেদ আলী, বাবু মিয়া, হৃদয় হাসান, সাগর হোসেন, পলাশ মিয়া, রাসেল, নাহিদ, রবিন এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হাফিজুুর রহমান সোহরাব ও তার কয়েকজন কর্মীসহ ৩৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
নৌকার প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দিন বলেন, সূয়াপুর বাজারে আমার নেতা কর্মীরা ভোট চাইতে গেলে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমান সোহরাব দলবল নিয়ে আমার কর্মীদের ওপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে ছয়জনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে এবং আমার ছেলের আঙুল কেটে ফেলে। এছাড়া আমার নির্বাচনী ক্যাম্পও ভাঙচুর করেছে।
এ ব্যাপারে হাফিজুর রহমান সোহরাবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিংসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ধামরাইয়ের নান্নার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলতাফ হোসেন মোল্লা জানান, নৌকার প্রার্থী আবুল বাশার বাদশার কর্মীরা আমার গোপালপুর, ধাইরা এলাকার তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। তারা আমার কর্মীদের ভোট চাইতেও বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে নৌকার প্রার্থী আবুল বাশার বাদশা নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করেছেন।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর রাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে ধামরাইয়ের সোমভাগ, বালিয়া, গাংগুটিয়ার, রোয়াইল ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচারনাকে কেন্দ্র করে নৌকার সমর্থক ও স্বতন্ত্র এবং বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতেও অন্তত ২৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন। ওই সব ঘটনায় থানায় প্রায় শতাধিক ব্যাক্তিকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা মামলা হয়েছে।
ধামরাই উপজেলা নির্বাচন অফিসার আয়েশা আক্তার বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নে সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ছোটখাটো নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গের অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়েই সুয়াপুর ও নান্নার ইউনিয়নে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ