সাগর নয়, তবুও নাম তার রামসাগর। মধ্যযুগের বিখ্যাত সামন্ত রাজার অমর কীর্তি রামসাগর, যা সারা বাংলার এক সৌন্দর্য মণ্ডিত ঐতিহাসিক দীঘি। প্রাকৃতিক অপরূপ নয়নাভিরাম দীঘিটি পর্যটকদের মনকে ছুয়ে যায় ভাল লাগার পরশে। আরও বেশি পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণগুলো।
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় এখন ছোটবড় ৬৪টি চিত্রা হরিণ পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণ বাড়িয়েছে। মুক্ত পরিবেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নতুন অতিথি নিয়ে মায়াবী চিত্রা হরিণের পাল। এছাড়াও এখানে রয়েছে অজগড় সাপ, বানর, পাখিসহ আরও কিছু বন্যপ্রাণী।
চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণের সংসারে গত জানুয়ারি থেকে কয়েক মাসে এসেছে ১২টি নতুন অতিথি। এনিয়ে এখন মিনি চিরিয়াখানায় নতুন অতিথিসহ হয় ৬৬টি চিত্রা হরিণ। এর মধ্যে তেতুলিয়া বনবিভাগে পাঠানো হয়েছে ২টি চিত্রা হরিণ। দিন দিন সংখ্যা বাড়ছেই এসব হরিণের। এরই মধ্যে ১০টি মা হরিণ গর্ভধারন করেছে, যা আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে প্রসব করবে বলে জানান দিনাজপুর বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক মো. সাদেকুর রহমান সাদেক।
চিত্রা হরিণগুলোর খাদ্যের জন্য সঠিক সময়ে খাদ্য বাজেট আসে না। এতে একটু সমস্যা হয়, যা স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হয়। পরে বাজেট এলে তা সমন্বয় করা হয়। চিত্রা হরিণগুলোকে ছোলা, নেপিয়ার ঘাস, গমের ভূসি, ভুট্টা ভাঙা, চক্কর, লতাপাতা ইত্যাদি খাবার দেওয়া হয়।
বনবিভাগের কয়েকজন জানায়, চিত্রা হরিণের প্রিয় খাবার শাপলা পাতা। বরাদ্দ কম এলেও রামসাগর দীঘিতে শাপলা চাষ করতে পারলে হরিণের খাদ্য চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে দীঘিতে মাছ শিকার, ইঞ্জিন নৌকা চালানোর কারণে শাপলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। আবার রামসাগরের জলরাশির দেখভাল করে জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে প্রথম ৬টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। হরিণগুলো দ্রুত বংশ বিস্তারে বাড়তে বাড়তে এদের সংখ্যা এখন বাচ্চাসহ ৬৪টি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই