ঝালকাঠির নলছিটিতে এক শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মীমাংসার নামে সালিশে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন গ্রামের মাতাব্বররা। ঘটনাটি নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত বৃদ্ধের নাম মো. আলম খান। তিনি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের মেরহার গ্রামের মৃত হোসেন আলি খানের ছেলে।
শিশুর নানী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের পূর্ব ষাইটপাকিয়া গ্রামে তার নানার বাড়িতে থেকে শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে শিশুটি বাসায় ফিরলে, তাকে রেখে তার নানী মুদি মালমাল কিনতে স্থানীয় একটি দোকানে যান। এই সুযোগে আলম খান শিশুটিকে একা পেয়ে ঝাপটে ধরেন। জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালান। শিশুর নানী বাসায় ফিরে, এ ঘটনা দেখে ফেলেন। তখন দৌড়ে পালিয়ে যান আলম।
বিষয়টি জানাজানি হলে, মীমাংসার জন্য ওইদিন রাতে শিশুর নানার বাসায় সালিশ বসে। সালিশে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এতে মাতাব্বররা অভিযুক্ত আলম খানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫০ বার জুতাপেটা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সালিশ বৈঠকে তাৎক্ষণিক আলম খানকে জুতাপেটা করা হলেও জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য সময় দেন মাতব্বররা।
কিন্তু আলম খান টাকা জোগাড় করতে না পারায় আজ শনিবার সকালে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী আরও জানান, আকবর বখস নামে এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যস্থতায় সমঝোতা সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে আজিজ, আনিস, খলিলসহ অন্তত ১০ জন স্থানীয় মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।
তবে আকবর বখসসহ অন্যরা সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেছেন। তারা বলেন, তারা শিশু ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা শুনেছেন। কিন্তু সমঝোতা সালিশ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, শিশু ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি সালিশির মাধ্যমে আর্থিক জরিমানা ও জুতাপেটায় নিষ্পত্তি করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ