ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের ৯ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আলী আকবর, পলাশ বৈরাগী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাহাদুল আখতার তপন ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল সিকদার প্রমুখ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল। তিনি বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পদে থেকে যারা বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের ১ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলা হয়। কিন্তু যারা প্রত্যাহার করেনি, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গত ২৫ নভেম্বর বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৯ জনকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির স্ব-স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট সুপারিশ করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন-শেখর ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, রূপাপাত ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হেমায়েত হোসেন, ময়না ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম, ময়না ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. কামরুজ্জামান, দাদপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. শামীম মোল্যা, দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হারুন-অর-রশিদ, একই ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন, গুনবহা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক মো. মান্নান মাতুব্বর।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন থেকে চতুল ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রাথী হিসেবে নির্বাচন করছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, বোয়ালমারী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. আ. হক, রূপাপাত ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রবিউল মোল্যা ও ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মো. ইমরান হোসেন নবাব ঘোষপুর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই তালিকার বাইরেও বিদ্রোহী হিসেবে কেউ থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্রোহী বিজয়ী হলে তিনি চেয়ারম্যান হবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। এছাড়া দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা সার্বক্ষণিক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা একই কথা। এদের কেউই ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে ঢুকতে পারবে না। আর যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পদে থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন স্ব-স্ব সহযোগী সংগঠনকে এ ব্যাপারে অনুরূপ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই