খাগড়াছড়িতে আজ ১৫ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মহকুমা ও বর্তমানে জেলা খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন এ অঞ্চলের সাব-ডিভিশন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন খাগড়াছড়ি মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে খাগড়াছড়িকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন।
খাগড়াছড়িতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে, মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ পরিবার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে ।
বেঙ্গল লিরারেশন ফোর্স, পার্বত্য চট্টগ্রাম এর কমান্ডার রণ বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ১৪ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি’র ভাইবোনছড়ায় প্রতিরক্ষা ঘাঁটি রেখে ক্যাপ্টেন অশোক দাসগুপ্ত ও দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী প্রায় দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার ফাইটিং ফোর্স নিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। কুকিছড়া অতিক্রম করে গাছবান পা রাখার সাথে সাথেই উচুঁ পাহাড় থেকে পাক বাহিনী ও তাদের দোসর মিজোরা গুলি বর্ষণ করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে টিকতে না পেরে মিজো ও পাক সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের দিন সকালে ক্যাপ্টেন অশোক দাসগুপ্তের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভাইবোনছড়া থেকে খাগড়াছড়ি পুরো এলাকাকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করে তৎকালীন খাগড়াছড়ি মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে খাগড়াছড়ি অঞ্চলকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করেন। ’
এ উপলক্ষে সকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা, পতাকা উত্তোলন করেন জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ।
পরে মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডারের নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযুদ্ধ সংসদ সন্তান কমান্ডারের নেতৃবৃন্দরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের কমান্ডার আব্দুর রহমান বক্তব্য রাখেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মংসাথোয়াই চৌধুরী, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রইস উদ্দিন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাসান, যুগ্ম সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম ও আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।