বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া সেই পাঁচ শ্রমিকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় সব লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাতেই একজনের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার পকেটে পাওয়া মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় জানা যায়। এছাড়া বুধবার বেলা ১১টায় বাকি চারজনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এই লাশগুলোর পরিবার শনাক্তের জন্য বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা দিয়েছিলেন। সেই বর্ণনা অনুযায়ী লাশগুলো মিলে গেলে সেগুলো শনাক্ত করা হয়। যে কারণে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন পড়েনি।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সান্তাহারে বিআইআরএস প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখান থেকে সান্তাহার পৌর এলাকার কোমল দোগাছী গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে সিহাব হোসেন (১৪), উপজেলার পালোয়ান পাড়ার হাসান আলীর ছেলে ইমন আলী মন্ডল (১৫), সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া গ্রামের নাছির উদ্দীনের ছেলে শাহজাহান আলী (২৮), ছাতনী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বেলাল হোসেন (৫৫) ও পৌর শহরের ঘোড়াঘাটের মৃত আফছার উদ্দীনের ছেলে আব্দুল খালেকের (৫০) লাশ উদ্ধার করে।
লাশগুলো উদ্ধারের পর মঙ্গলবার রাতে নিহত শাহজাহান আলীর বাবা নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, আগুন লাগার খবর শুনে বগুড়া থেকে জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাহউদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, কারখানাটিতে দুই শিফটটে ৭২ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন। প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পাশাপাশি সহকারী শ্রমিক হিসেবে কিশোররাও কাজ করে এই কারখানায়। ২০২০ সাল থেকে সান্তাহার পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, ইসমাঈল হোসেন, জিয়াউল নাছিম রাঙ্গা ও মনোয়ার হোসেন- এই চারজনের যৌথ মালিকানায় কারখানাটি পরিচালিত হয়ে আসছিল।
বিডি প্রতিদিন/কালাম