১২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২০

রাঙামাটির স্বপ্নের নানিয়ারচর সেতুর যাত্রা শুরু

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

রাঙামাটির স্বপ্নের নানিয়ারচর সেতুর যাত্রা শুরু

দীর্ঘ ৭ বছর পর রাঙামাটির স্বপ্নের সেতুর যাত্রা শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাঙামাটির নানিয়ারচর সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে তিনি কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত সংযোগ সড়কের উদ্বোধন করেছেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আর রাঙামাটি থেকে ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা, জেলা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফিন, নানিয়ারচরের ইউএনও শিউলি রহমান তিন্নী।

সেতুটি উদ্বোধনের পর আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায় রাঙামাটিবাসীর মধ্যে। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নানিয়ারচরে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘতম এ সেতু নির্মাণের ফলে শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন আরও একধাপ এগোলো। এতে করে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখবে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি করেছিলাম। এখনো শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।

বান্দরবানের সীমান্ত সড়ক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তার জন্য সীমান্ত সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ সড়কটি নির্মাণের ফলে স্থানীয়দের যাতায়াত ব্যবস্থা এবং সীমান্ত সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণে সেনাবাহিনী কাজ করছে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ৫০ বছর বছর ধরে নানিয়ারচরের বাসিন্দাদের দাবি ছিল রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের চেঙ্গি নদীর উপর একটি সংযোগ সেতুর। বর্তমান সরকারের কারণে রাঙামাটির সে স্বপ্নে সেতুটি পাহাড়ে পাহাড়ে তৈরি করেছে যোগাযোগের নতুন মাত্রা। শুধু নানিয়ারচর উপজেলার বাসিন্দারা নয়, এ সেতুর সুফল ভোগ করবে রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু, খাগড়াছড়ি-সাজেক-বাঘাইছড়ির বাসিন্দরাও। এতে যেমন সচল হবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঠিক তেমনি অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন হবে কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নানিয়ারচর সেতুর কাজ শুরু হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাঙামাটির নানিয়ারচরের এক জনসভায় এ সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। এর পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইসি ব্রিগেড এর ২০ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) ইউনিট এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। বর্তমানে পুরোপুরি শেষ হয়েছে নানিয়ারচর সেতু নির্মাণ কাজ। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার এবং প্রস্থ ৯.৮ মিটার। সেতু প্রকল্পটির মোট বাজেট ২২৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য খরচ হয় ৪৬ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। সেতুটির সাথে সংযোগ সড়ক রয়েছে ২.২ মিটার। এই সড়কের প্রস্থ ৭.৯ মিটার।


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর