রংপুর অঞ্চলে চাল নিয়ে চালবাজি থামছেই না। নতুন বছরের শুরু থেকে চালের দাম বেড়েই চলছে। দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। সাধারণ মানুষ চালের দামের লাগাম টানতে বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে মুষ্টিমেয় কয়েকটি রাইস মিল মালিক ও মজুদদার দায়ী বলে মনে করছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
রংপুর নগরীর সিটি বাজার, সিও বাজার, ধাপ, বুড়িরহাট, লালবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে এখন স্বর্ণা ও গুটি স্বর্ণা জাতের মোটা চালের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজিতে। আর সরু চালের মধ্যে মাঝারি মানের (মিনিকেট ও কাটারি) চালের দাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা। এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভালো মানের সরু চাল (নাজিরশাইল ও জিরাশাইল) যা প্রতিকেজি ৬৮ থেকে ৭২ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। তবে ৫০ টাকা কেজির নিচে নিম্নমানের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে না।
নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার চালের আড়তদাররা জানান, গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের (৫০ কেজি) বস্তা ছিল তিন হাজার টাকা, যার বর্তমান বাজার মূল্য তিন হাজার ২০০ টাকা, ব্রিধান-২৮ (৫০ কেজি) বস্তা ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা, বর্তমান বাজার মূল্য ২ হাজার ৮০০ টাকা, মোটা চালের মধ্যে গুটি স্বর্ণা (৫০ কেজি) বস্তা ছিল দুই হাজার ২০০ টাকা, যা বর্তমান বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ টাকা।
চালের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ছোট ছোট হাসকিং মিলগুলো এখন আর চলে না। বড় অটো রাইস মিল মালিকরা কমদামে ধান কিনে মজুদ করে নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
মিল চাতাল মালিক, চাল ব্যবসায়ী, খুচরা বিক্রেতা ও কৃষকদের অভিযোগ, উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৬০০ অটোরাইস মিল মালিক নিজেদের ইচ্ছেমতো মজুদের পাহাড় গড়ে তুলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।
নগরীর শাহী পাড়ার মাহমুদুল করিম বলেন কিছুদিন আগে যে চাল নিয়েছি ২৯০০ টাকা বস্তা (৫ কেজি)। তা এখন ৩ হাজার ১০০ টাকা। তার মতে অনেকেই বেশি দামে চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
রংপুরের মাহিগঞ্জসহ দিনাজপুরের পুলহাট, বগুড়া, নওগাঁ ও রাজশাহী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। বৈরি আবহাওয়ার অজুহাতে এসব মোকামে কয়েকদিন থেকে অটোরাইস মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার এখনই যদি এই অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তা হলে এই সিন্ডিকেটটি চালের বাজার আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।
রংপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, অটো রাইসমিল মালিকরা আগে থেকে ধানের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অটোরাইস মিলগুলোর সাথে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা