আসন্ন নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে জেলা নির্বাচন অফিস। তবে পৌরসভার ভোটকে ঘিরে ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেলেও ইভিএমকে সাধারণ ভোটারদের মাঝে পরিচিত করার কোনো প্রয়াস এখন পর্যন্ত লক্ষ করা যাচ্ছে না। অথচ পৌরসভার বিগত নির্বাচনগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত সাধারণ ভোটাররা।
বর্তমানে ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন তারা। যারা শিক্ষিত তাদের ইভিএম ব্যাপারে জ্ঞান থাকলেও যারা বৃদ্ধ, অশিক্ষিত ও কম শিক্ষিত ভোটার আছেন, তাদের জন্য ইভিএমে ভোট দেওয়া দুরূহ ব্যাপার। ইভিএম মেশিনটা দেখতে কেমন, কীভাবে কাজ করে, তার কিছুই জানেন না এই পৌরসভার সাধারণ ভোটাররা।
সরেজমিন অনেক সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হয়, তা তারা জানেন না। ফেরিওয়ালা আবু সাঈদ উত্তর আলাইপুর এলাকার বাসিন্দা। তাকে ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, এই মেশিনটাতো চিনি না।
চা বিক্রেতা জলিল, বাবু, মোল্লা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মহাজন আতোয়ার মোল্লা, ফুটপাতের শীতের কাপড় বিক্রেতা মাহবুব, বাসা বাড়িতে সেবা প্রদানকারী পরিচারিকা লাইলি ও তসলিমা জানায়, এই প্রথম ইভিএম মেশিনের নাম শুনছি। ভোট দেওয়া না কি সহজ। সিল মারা লাগে না। আঙুল দিয়ে চাপলেই ভোট দেওয়া হবে। কিন্তু হাতে-কলমে না শিখলে তো এক প্রতীকের ভোট আরেক প্রতীকে গিয়ে পড়বে। আর ভোট দিতেও অনেক সময় লেগে যাবে।
উত্তর চৌকিরপাড় এলাকার শিক্ষক তন্ময় রায় জানান, ইভিএমে ভোট দেওয়া সহজ। তবে অশিক্ষিত, কম শিক্ষিত ও বৃদ্ধদের হাতে-কলমে না শিখালে তারা ভোট দিতে ভুল করতে পারেন ও ভোট দিতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। জেলা নির্বাচন অফিস সাধারণ ভোটারদের ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হবে, সে ব্যাপারে ইভিএম প্রদর্শন ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. আছলাম জানান, সাধারণ ভোটারদের ইভিএমে ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণ ও ইভিএম প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। পৌরসভা এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হবে আগামী ১৪ জানুয়ারি নাটোর পৌর এলাকার ৩০টি কেন্দ্রেই প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের সমন্বয়ে একেকটি টিম সাধারণ ভোটারদের ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেবে। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই