দীর্ঘদিন যাবৎ পারাপারে নেই সেতু, তাই বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা নদী পাড়ের মানুষের। অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয় এই সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচলকারী এলাকাবাসীর। ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর রয়েছে নড়বড়ে এই সাঁকো।
প্রতিদিন ছয়টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করেন এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও রোগীরা। দীর্ঘদিনেও সেতু তৈরি না হওয়ায় কিংবা কোনো সংস্কারের উদ্যোগ না থাকায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে নির্বাচন শেষে কোনো খোঁজ রাখেননি। তাছাড়া প্রতিনিয়তই এই সাঁকোতে দুর্ঘটনা ঘটছে।
কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলের কৃষিপণ্য প্রচুর চাষ হলেও সেগুলো সময়মতো যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় পৌঁছানো যায় না। ফলে চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন ও হতাশ হচ্ছেন। সহজলভ্যভাবে তারা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে হচ্ছেন বঞ্চিত। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এখানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে।
জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছেন গ্রামের মানুষ। এই সাঁকো দিয়ে ছয়টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ আলী জানায়, এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। একবার পা পিছলে পড়ে আহত হয়েছি। এখন সাবধানে সাঁকোতে উঠে চলাচল করছি।
পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মীর হোসেন বলেন, একটি সেতুর অভাবে ৪০ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমরা এলাকাবাসীরা বেঁচে আছি। সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন।
সাঁকো মেরামতকারী শাহাজামাল আলী জানান,৭ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোটি প্রতিদিন মেরামত করে আসছি। এলাকার বাঁশ ও ধান সংগ্রহ করে সাঁকোটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, বারোমাসিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ অতি প্রয়োজন। অনেক আগে থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আসিক ইকবাল রাজিব বলেন, এই নদীর উপর ৩০ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রসেস করে ইতিমধ্যেই সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই