২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৪:০৮

পয়োনিষ্কাশনের পানি ফেলতে সরকারি সড়কের মাঝখানে খোঁড়া হলো গর্ত!

নাজমুল হুদা, সাভার

পয়োনিষ্কাশনের পানি ফেলতে সরকারি সড়কের মাঝখানে খোঁড়া হলো গর্ত!

সাভারে পয়োনিষ্কাশনের পানি ফেলতে প্রভাব খাটিয়ে সড়কের মাঝে গর্ত খোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর বাধার মুখে ওই সড়কের জায়গা তার পৈত্রিক সম্পত্তি বলে দাবি করেন ওই নারী। তবে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি সরকারি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ঘটনাটি সাভার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মিল্টন এলাকার।

অভিযুক্ত সুফিয়া বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাস্তাটা আমার বাড়ির সামনে এসেই শেষ হয়েছে। আর এই রাস্তার জমি আমরাই দিয়েছি। আমার বাড়ির ভেতরে ময়লা পানি রাখার কোনো জায়গা নেই। তাই রাস্তার ভেতরেই একটা গর্ত করেছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা আলাউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের এলাকার ওই সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার ও প্রস্থ ১২ ফুট। প্রতিদিন গার্মেন্টস শ্রমিকসহ প্রায় ৫০০ মানুষ চলাচল করেন। কিন্তু রবিবার সড়ক থেকে একটু দূরের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম তার বাসার বাথরুমের পানি ফেলার জন্য সড়কের মাঝে একটি গভীর কূপ করেন। এ সময় তাকে স্থানীয়রা বাধা দিলে তার পৈত্রিক জমি থেকে সড়কের জায়গা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন।’ 

সড়কের মাঝে এভাবে গভীর কূপ খোঁড়ার কারণে থেকে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন অনেকে। বাসিন্দারা জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলে ওই নারী তাদের কাছে তিন-চার দিন সময় চেয়ে নেন। সড়কে খোঁড়া গর্তটি আপাতত টিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

অভিযুক্ত সুফিয়া বেগম বলেন, ‘রাস্তাটা আমার বাড়ির সামনে এসেই শেষ হয়েছে। আর এই রাস্তার জমি আমরাই দিয়েছি। আমার বাড়ির ভেতরে ময়লা পানি রাখার কোনো জায়গা নেই। তাই রাস্তার ভেতরেই একটা গর্ত করে বানাচ্ছি। সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা রাস্তার জমি দিয়েছি। সেই রাস্তা সরকারি হয়েছে। এখন তো আমাদেরও সরকারকে সহায়তা করতে হবে। আমরা যদি বাড়ির বর্জ্য পানি ফেলবার রাস্তা না পাই তো কী করব।’

ওয়ার্ডটির সংরক্ষিত আসনের নারী মেম্বার মনোয়ারা বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজ চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার ও আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সরকারি সড়কের মাঝে আমরা গর্ত খোঁড়া অবস্থায় দেখেছি। সুফিয়া বেগম নামে এক নারী তার বাসার পয়োনিষ্কাশনের জন্য গর্তটি করেছেন। তবে তাকে তিন দিন সময় দেয়া হয়েছে বিষয়টি মীমাংসার জন্য।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মানুষের চলাচলের রাস্তার জায়গায় কারো মালিকানা হলেও কেউ বন্ধ করতে পারে না। জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার অধিকার কারও নাই। এটি আইনসিদ্ধ নয়। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সমাধান করার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে কেউ যোগাযোগ করেনি।’

স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহেল রানা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি সমস্যাটি সমাধান করার। সুফিয়া রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রতিপক্ষের লোকজনের অসহযোগিতার কারণে সমস্যাটি সমাধান করা সম্ভব হয়নি।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর