এপেনডিক্সের অপারেশন করতে গিয়ে এক নারীর মলদ্বার কেটে ফেলা এবং নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগে ফরিদপুরে পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই পরিচালককে ৭ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার রাতে শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে অবস্থিত পিয়ারলেস হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম রাজি-টুলু। এসময় হাসপাতালের অনুমোদন ও ডাক্তার না থাকা এবং পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর থাকায় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন চন্দ্র দাস ও আসাদুজ্জামান আসাদকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি রাজবাড়ী জেলার এক নারী ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন এপেনডিক্সের অপারেশন করতে। তখন হাসপাতালের চিকিৎসক উৎপল নাগ জানান, সরকারি হাসপাতালে অপারেশন করাতে সিরিয়াল অনুযায়ী দেরি হবে। তিনি প্রাইভেট একটি হাসপাতালে বসেন এবং সেখান দ্রুতই অপারেশন করতে পারবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই নারীকে ভর্তি করার পিয়ারলেস হাসপাতালে। পরে অপারেশন করতে গিয়ে ঐ চিকিৎসক নারীর মলদ্বার কেটে ফেলেন। পরে উক্ত নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভুল চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন বরাবরে অভিযোগ করেন ঐ নারীর স্বামী।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, ২০১৯ সালের পর থেকে হাসপাতালের লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়নি। এছাড়া ১০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও দেখা যায় ২০ শয্যা। ডাক্তার তিন জন থাকার কথা থাকলেও একজনকেও পাওয়া যায়নি। এছাড়া ল্যাবের পরিবেশ ছিল নোংরা। যে সকল নার্স ছিলেন কেউই ডিপ্লোমাধারী নন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে চালানো হচ্ছিল না হাসপাতালটি। এ কারণে হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন চন্দ্র দাস ও আসাদুজ্জামান আসাদকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে শর্ত পূরণের। এ ব্যতিক্রম হলে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা