চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি মারাত্মকভাবে আহত হন রক্তিম সুশীল। আহতের আটদিন পার হলেও জ্ঞান ফিরেনি তার। মঙ্গলবার পর্যন্ত তার অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় আছে। বর্তমানে রক্তিম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
আজ দুপুরে হাসপাতালের আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, রক্তিম আগের মতই অজ্ঞান অবস্থায় শয্যায় আছেন। জ্ঞান ফিরেনি এখনও। চমেক হাসপাতালে তার সমন্বিত চিকিৎসা চলছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, রক্তিমের চিকিৎসায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। রোগীর সব ধরনের চিকিৎসা এ হাসপাতালেই আছে এবং সর্বোচ্চ চেষ্টায় চিকিৎসা চলছে। কামনা করি, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরবেন। একটি পরিবারে এক সঙ্গে পাঁচজন মানুষ চলে যাওয়ার পর তারা আসলে বিমর্ষ হওয়ার কথা। তাই আমরা পরিবারের প্রতি সর্বোচ্চ সহমর্মিতা দেখাচ্ছি।
চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা খাতুন পদ্ম বলেন, রক্তিমের অবস্থা এখনও স্থিতিশীল। মস্তিস্কেও আঘাত পেয়েছেন তিনি। তার সব ধরনের চিকিৎসা চলছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় তদারকি করছেন।
জানা যায়, চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের হাসিনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুরেশ চন্দ্র মারা যান গত ৩০ জানুয়ারি। সুরেশের মৃত্যুর ১০ দিন পূর্ণ হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সুরেশের ছেলেমেয়েরা বাড়িতে এসেছিলেন। ওইদিন বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় সুরেশ চন্দ্রের সন্তান অনুপম সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্মরণ সুশীল মারা যান। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই দিন চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অপর সন্তান রক্তিম সুশীলকে। ওইদিনই জরুরি ভিত্তিতে তার আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি না থাকায় পরদিন বেসরকারি এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে একদিন রাখা হয়। কিন্তু আর্থিক অক্ষমতার কারণে পরে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেখানে দু’দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন রক্তিম। গত রবিবার তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান সুরেশ চন্দ্র সুশীলের মেয়ে মুন্নী সুশীল। আহত হন আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। নিহতদের বোন হীরা শীল মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে।