গাজীপুরে অটোরিকশা চালক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ছিনতাই চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ।
নিহত হুমায়ূন কবির রংপুর সদরের কাটাবাড়ী গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দেশীপাড়া এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে অটোরিকশা চালাতেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার লক্ষ্মীপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে আলমগীর (৩০), পাবনা জেলার আতাইকোলা থানার বাউখোলা ঘোনাপাড়া গ্রামের নুরুলের ছেলে শামসুল (৩২), বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার বড়তা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজ (৩২), বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার গাববাড়ী সরদারবাড়ি গ্রামের আবদুল হাকিম সরদারের ছেলে মো. আল মামুন সরদার ওরফে আল-আমীন (৩৩), নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পালোরা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৪)।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন লোহাকৈর এলাকার মাজারের পাশের পুকুর থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অটোরিকশা চালক হুমায়ুন কবিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় সনাক্তের পর পুলিশ নিহতের স্বজন ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত ছিনতাইকারী আলমগীর ও শামসুলকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরিশালের উজিরপুর থেকে অপর আসামি টুকু ও আল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অপর আসামি রফিকুল ইসলামকে গাজীপুর পিবিআই গ্রেফতার করে।
পুলিশের উপ-কমিশনার ইলত্ৎুমিশ জানান, গ্রেফতারকৃত আল আমিন গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ঝালমুড়ি বিক্রেতা সেজে সালনা ব্রিজের কাছে অবস্থান করে। ভিকটিম অটোরিকশা চালক হুমায়ূন তার কাছ থেকে ঝালমুড়ি কিনতে গেলে কৌশলে আল আমিন (ছদ্মবেশী ঝালমুড়ি বিক্রেতা) মুড়িতে ঘুমের ওষুধ (লিকুইড) মিশিয়ে দেয়। এসময় ছিনতাইকারী চক্রের অপর সদস্য শামসুল ও টুকু (মূল হোতা) যাত্রী হিসেবে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে কোনাবাড়ি এলাকায় পৌঁছান। সেখান চালক অচেতন হয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এক পর্যায়ে রাতে ভিকটিমকে লোহাকৈর মাজারের পাশের পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। এসময় চালক হুমায়ুনের কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চালকের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা একাধিক মামলার আসামি। তারা ছিনতাই কাজে ঝালমুড়ি বিক্রেতা, চা বিক্রেতা সেজে অভিনব কায়দায় ছিনতাই করে আসছে। পুলিশ লুন্ঠিত অটোরিকশা ও মোবাইল উদ্ধার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ, কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদাসহ অন্যরা।
বিডি প্রতিদিন/এএ