ইউক্রেনে চলা সংঘাত কেবল রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি পশ্চিমা বিশ্বেরও যুদ্ধ এমনটাই মন্তব্য করেছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই সংঘাত একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি পশ্চিমা সভ্যতার ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
সোমবার ওয়ারশ সিকিউরিটি ফোরামে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী টাস্ক ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের কাছে রাশিয়ার কথিত হুমকি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করেন। তার মতে, পশ্চিমা সমাজকে এটা বোঝানোই এখন ইউরোপীয় নেতাদের জন্য সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
টাস্ক বলেন, এই যুদ্ধ আমাদেরও যুদ্ধ এবং এর সঙ্গে পশ্চিমা সভ্যতার মৌলিক স্বার্থ জড়িত। তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনের পরাজয় হলে পোল্যান্ড থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পুরো পশ্চিমা সভ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর মধ্যে সংহতি ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।
পোল্যান্ড ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান সমর্থক এবং এই সংঘাতের বিষয়ে টাস্ক বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি পোলিশদের মধ্যে ইউক্রেনের প্রতি তৈরি হওয়া বিরাগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন এবং এর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে পোলিশ রাজনীতিবিদদের এই স্রোত থামাতে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী টাস্ক আরও জানান, পোলিশ সেনাবাহিনীর বৃহৎ পরিসরে আধুনিকীকরণ-এর পরিকল্পনা চলছে এবং একই সঙ্গে তিনি ইইউ-এর মধ্যে সমাজ ও সরকার উভয়ের সম্পূর্ণ সংহতির ডাক দেন।
অন্যদিকে, মস্কো এই সংঘাতকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের একটি প্রক্সি যুদ্ধ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রকৃত যুদ্ধ ঘোষণার উদ্দেশ্যেই এই সংঘাত উসকে দিয়েছে। শনিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় ল্যাভরভ ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সেই দাবি উড়িয়ে দেন যে রাশিয়া আগামী বছরগুলোতে ন্যাটোতে হামলা করার কথা ভাবছে। তিনি বলেন, রাশিয়ার এমন কোনো অভিপ্রায় ছিল না। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে মস্কো ইউরোপে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে কাজ করার জন্য ন্যাটো সদস্য দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু সেই প্রস্তাব উপেক্ষা করা হয়।
সূত্র; আরটি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল