উপমহাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম বগুড়ার শেরপুরের ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দির প্রাঙণে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
দিনটিকে ঘিরে বুধবার ওই মন্দিরস্থলে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী এসব পূণ্যার্থীরা সকাল থেকেই অতীত জীবনের পাপ মোচনের আশায় মন্দিরের শাখা পুকুরে পূণ্যস্নানে অংশ নেন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে এবার বিদেশি পূণ্যার্থীরা না আসলেও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী অসংখ্য নারী-পুরুষ এই উৎসবে অংশ নেন।
মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত থেকেই তিথি অনুযায়ী মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমার উৎসবে যোগ দিতে পূণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। এজন্য অসংখ্য দর্শনার্থী মন্দির এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে রাত্রি যাপন করেন। সেই সঙ্গে সকাল থেকেই পূণ্য লাভের আশায় মন্দিরের শাঁখা পুকুরে পূন্যস্নান করতে থাকেন। প্রতি বছর মাঘ মাসে পূর্ণিমা চাঁদের মাঘী পূর্ণিমার পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী এই পূণ্যস্থানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থেকে আসা করুণা রানী, শর্মিলি ঘোষ জানান, মায়ের দর্শন নিতে এখানে এসেছি। মনের আশা বাসনা পূরণের জন্য স্নান শেষে মায়ের কাছে আর্শিবাদ করেছি।
নাটোরের শেফালী সূত্রধর বলেন, এখানে আসলে দেহ-মন পবিত্র হয়। তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি। মনের বাসনা পূরণ হবে- এমন আশা নিয়ে মায়ের মন্দিরে এসেছি বলে জানান রাজশাহীর মিনা রানীসহ আরও অনেকে।
ধর্মীয় শাস্ত্র্যমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে পূণ্যকর্মে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভ হয়। আর সেই আশায় দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত নর, নারী ও শিশু-কিশোর মন্দিরের শাঁখা পুকুরে স্নান করেন। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এছাড়া প্রতিবারের ন্যায় এবারো শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে।
ভবানীপুর মন্দির পরিচালনা ও সংস্কার কমিটির নেতা নিমাই ঘোষ জানান, যুগ যুগ আগে থেকেই এই ধর্মীয় তিথি উৎসব পালন হয়ে আসছে। এই বছরও হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটেছে। এখানে দূর-দূরান্তের পূণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল।
বিডি প্রতিদিন/কালাম