গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনবিহীন গড়ে উঠেছে খাবার হোটেল ও মিষ্টির দোকান। এসব হোটেল ও মিষ্টির কারখানায় অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে খাবার ও মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। অথচ স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোন নজরদারী।
খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সদরের সন্নিকটে কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই গোপনে নামে বে-নামে গড়ে উঠেছে দই, ঘি, মিষ্টি, রসমাইল, সন্দেশ তৈরির কারখানা। অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় এসব পন্য। কারখানার ভিতরে সব সময় অপরিছন্ন, শ্রমিকরাও থাকেন অপরিষ্কার। তারা খালি গায়ে দুর্গন্ধময় স্থানে এসব খাবার তৈরির সময় ঘাম ঝড়ে পড়ছে এসব পণ্যে। আরো আকর্ষণীয় করতে দইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ বিস্কুটের গুঁড়াও। উত্তরবঙ্গ থেকে কম দামে আনা নিম্নমানের ছানা দিয়ে তৈরি মিষ্টি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ শত থেকে ৩শত টাকা, সন্দেশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬ শত টাকা, রসমালাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪ শত টাকা।
এসব খাবারে যেমন পুষ্টির অভাব রয়েছে, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। অপরদিকে কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকা, বাইপাসের বিভিন্ন খাবার হোটেলে রান্না করার জায়গা নোংরা স্যাতসেতে দুর্গন্ধযুক্ত।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা-ত্রিমোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় নামে বে-নামে গড়ে উঠেছে খাবার হোটেল ও মানহীন ফাস্টফুডের দোকান। এসব খাবার হোটেলগুলোতে সব সময় নোংরা পরিবেশ এবং খোলা খাবারের উপর মাছি উড়তে ও খাবারে মরা মাছি পড়ে থাকতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় রান্না করা খাবারেও মরে যাওয়া পোকা পাওয়া যায়। এসব হোটেলে ভাত মাংস ভাজিসহ বিভিন্ন সবজি ও মিষ্টির দোকানে খাবার খেয়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের শরীরে এলার্জি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগবলাই ছড়াচ্ছে। এছাড়াও ক্যান্সারসহ বড় ধরনের বিভিন্ন রোগ-বলাই ছড়ানোর আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর নজরদারী জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক উৎপলা রানী দাস বলেন, অপরিস্কার নোংরা পরিবেশে এসব হোটেলের খাবার ও মিষ্টি তৈরি হচ্ছে। এগুলো খেয়ে শরীরে এলার্জি, ডায়রিয়া ও ক্যান্সারের মতো বড় ধরনের রোগও হতে পারে। কিন্তু আমার একার পক্ষে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি এসব হোটেল, ফাস্টফুড ও মিষ্টি দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, যে সমস্ত খাবার হোটেল ও মিষ্টির দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রয়েছে, সে সমস্ত হোটেল পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল