জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথেই দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার হাত ধরেই জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। বাংলাদেশ আর ক্ষুধা-দারিদ্র দেশ নয়, এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান সরকারের কারণেই দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি একেএম হোসেন আলী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদারের নেতৃত্বে উপজেলার উপজেলা, পৌরসভা এবং থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বেলা সাড়ে ১২টায় তারা টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতার সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পবিত্র ফাতেহা পাঠ শেষে তারা বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন।
পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে রাখা পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লেখেন নেতারা। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়র সৈয়দ আবদুর রউফ মুক্তা, সদর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসহাক আলী, আনোয়ার পারভেজ লিমন, অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ লিটন, আনোয়ার হোসেন ফারুক, বদরুল আলম, ইহসান আলী, অ্যাডভোকেট সেলিনা পারভীন পান্না ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার আবদুস সামাদ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জেলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতারা।
এ সময় জেলা সভাপতি একেএম হোসেন আলী হাসান বলেন, যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্ম না হত তাহলে আমরা বাঙালিরা জাতি হিসেবে কখনো বিশ্বে মর্যাদা পেতাম না। সম্মান পেতাম না, একটা রাষ্ট্রও পেতাম না, একটি স্বাধীন পতাকা পেতাম না। তিনি যে সংগ্রাম চালিয়েছেন তাতে অত্যন্ত কৌশলের সঙ্গে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।
তিনি বলেন, তাঁর সরকারের সাড়ে তিন বছরের শাসনকাল ছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সুপরিকল্পিত, সুদূরপ্রসারী ও সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর যথার্থই এক সফলতার ইতিহাস। তা সত্ত্বেও ঘাতক-চক্র হত্যা করে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, ইতিহাসের মহানায়ক, সর্বকালের বাঙালির গৌরবের ধন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতির পিতাকে হত্যা করে ঘাতক-চক্র শুধু দেশের গৌরবকেই ভূলুণ্ঠিত করেনি মুক্তিযুদ্ধের গর্বিত বিজয়কেও নানাভাবে কলঙ্কিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ চেতনা নস্যাৎ করে বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানে রূপান্তরের প্রক্রিয়া তা থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন আলী হাসান বলেন, জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন, এই দেশের মানুষ না খেয়ে থাকবে না। কেউ গৃহহীন থাকবে না। মানুষ থাকার জায়গা পাবে। উন্নত চিকিৎসা পাবে। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। অর্থাৎ জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু ঘাতকের দল তা পূরণ করতে দেয়নি, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সেটা বাস্তবায়ন করছেন। আজকে গৃহহীনরা ঘর পাচ্ছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এক সঙ্গে এত মানুষকে ঘর করে দেওয়ার নজির কোথায়ও নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এমন একটি নাম যা স্ব-মহিমায় প্রতিষ্ঠিত। তাঁর নাম মুছে ফেলার অনেক চেষ্টা-ষড়যন্ত্র হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আজ বাঙালির কাছে স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত। আজকে জাতির পিতার পবিত্র সমাধি থেকে আমাদের শপথ শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। কারণ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা শেখ হাসিনা ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব না। তিনি ধ্বংসস্তূপের ওপর সৃষ্টির পতাকা উড়ান। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বিদেশে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হলে সকলেই সম্মানের চোখে বাংলাদেশকে দেখছে। অনেকেই আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে এশিয়ার টাইগার বলে প্রশংসা করছে। এ প্রশংসার মূল দাবিদার আমাদের মহান নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুভসূচনা করেছিলেন সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়নের জয়যাত্রা। ইতিহাস সঠিকভাবেই বঙ্গবন্ধুকে মূল্যায়ন করছে। তাই তাঁর ঋণ শোধ করতে হলে তাঁর আদর্শকে লালন করতে হবে। তাঁর আদর্শকে সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শক্তিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইস্পাত দৃঢ় শপথে অবিচল এগিয়ে যেতে হবে।
শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রজত কুমার ঘোষ, সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান লাভু, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জিন্নাহ আল মাঝী, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়, কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শেখ, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তাজউদ্দীন, বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দিলখুশ পরামানিক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বিএসসি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক রিয়াজ উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার সিকদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান দুদু প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর