গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাত-পা ও মুখ বেঁধে গলা কেটে চালককে খুন করে তার অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয় কয়েকজন ছিনতাইকারী। ক্লুলেস এ ঘটনার চারদিনের ব্যবধানে রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। এতে জড়িত ৫ কিশোর ও যুবককে গ্রেফতার এবং ছিনতাইকৃত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো শান্ত (২০), সুমন দাস (২০), শাহীন ইসলাম (১৯), লিপন ওরফে রিপন (২১) এবং আলম (২৮)। আজ বৃহষ্পতিবার গাজীপুরের পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ির আমবাগ এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে এলাকায় অটোরিকশা চালাতো মনিরুল ইসলাম (২২)। সে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার দুলদিয়ার এলাকার কাঙ্গাল প্রামানিকের ছেলে। গত ১৭ মার্চ বিকেলে প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাতে বাসায় না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। পরদিন বিকেলে কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক বরাবো এলাকার সরকারি পুকুরের পাশে গাছের বাগানে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচানো অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিরুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম ক্লুলেস এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই ৫ জন কিশোর ও যুবককে বিভিন্নস্থান থেকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে নিহতের ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও জানান, ঘটনারদিন বিকেলে যাত্রীবেশে শান্ত, শাহীন ও সুমন দাস কোনাবাড়ির আমবাগ এলাকা থেকে মনিরুলের অটোরিকশা ভাড়া করে কালিয়াকৈরের মৌচাক চাবাগান এলাকায় নিয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে সেখান থেকে তারা ওই রিকশা নিয়ে বরাবো এলাকার সরকারি পুকুরের পার্শ্ববর্তী আকাশমনি গাছের বাগানে যায়। সেখানে শান্ত ও শাহীন স্কচটেপ দিয়ে মনিরুলের মুখ ও দুই হাত পেঁচিয়ে ফেলে এবং ঝুট কাপড় দিয়ে দুই পা বেঁধে ফেলে। পরে তারা ঝুট কাপড় দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে মনিরুলের শ্বাসরোধ করে। এসময় সুমন দাস এন্টিকাটার দিয়ে গলাকেটে মনিরুলকে খুন করে। পরে নিহতের অটোরিকশাটি নিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ছিনতাইকৃত ওই অটোরিকশা মহানগরীর বাসন থানা এলাকার আলমের কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক