নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুর গ্রামে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা তিন বছরের শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়াকে (৪) গুলি করে হত্যা করে।
এদিকে মামলার আসামি রিমন (২৩) বাহিনীর প্রধান রিমনসহ পাঁচজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতারকৃত রিমন বাহিনীর অপর সদস্যরা হলেন- সোহেল উদ্দিন ওরফে মহিন উদ্দিন (২৪), সুজন (২৬), নাইমুল ইসলাম (২১) ও আকবর হোসেন (২৬)।
মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১ এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র্যাবের সাথে ৩০ মিনিটব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
বুধবার দুপুর ১২টায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক প্রেস ব্রিফিং করে র্যাব-১১। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পক্ষে পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, দীর্ঘদিন থেকে রিমন বাহিনীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তারা নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাদশা ও ফিরোজ নামের দুই প্রতিবেশীর মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ওই ঘটনার জেরে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধ হয়। এই বিরোধের সমঝোতার জন্য নিহতের বাবা প্রবাসী আবু জাহের উদ্যোগ নেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিমন ও তার বাহিনী এ হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার পাঁচদিন আগে রিমন, মহিন ও বাদশাসহ ৬/৭ জন গ্রেফতারকৃত মহিনের বাসায় হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে এবং রিমন শিশুকে হত্যা করার জন্য ২১ হাজার টাকায় একটি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করে।
র্যাব-১১ (সিপিসি-৩, কোম্পানি কমান্ডার) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শামীম হোসেন আসামিদের গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, প্রধান আসামি রিমন ও তার সহযোগী মহিউদ্দিনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে বিদেশি ও দেশীয় অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে তাসপিয়ার খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার দুপুরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় মাটি কাটার বিরোধকে কেন্দ্র করে রিমন বাহিনীর নের্তৃত্বে রিমন বাবার কোলে থাকা চার বছরের শিশুকে গুলি করে। এতে প্রবাসী আবু জাহেরও গুলিবৃদ্ধ হন। গুরুত্র অবস্থায় শিশুকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের খালু হুমায়ুন বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে। র্যাবের পাঁচজনসহ এ মামলায় নয়জনকে গ্রেফতার করা হল। মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম