মাষকলাই জিলাপি। শুধু রোজা ও পূজাকে কেন্দ্র করেই শেরপুরে কয়েকজন ব্যবসায়ী এই জিলাপি তৈরি করেন। শেরপুর শহরের মিষ্টি ব্যবসার কেন্দ্র গোয়ালপট্টির (ঘোষপট্টি) ছয়টি মিষ্টির দোকানে মাষকলাই জিলাপি বানানো হয়। সোনালি বর্ণ, রসালো, সুগন্ধি ও মচমচে এই জিলাপি রোজাদারদের পছন্দের ইফতারের উপকরণ বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দুপুরের পর থেকে মাষকলাই জিলাপি কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় লেগে যায়। জানা গেছে, রোজা আর পূজা ঘিরে বছরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জিলাপি বিক্রি হয় ওই কয়েকটি দোকানে।
জিলাপি কারিগর সূত্র জানায়, রোজা ও পূজা শুরুর মাস খানেক আগেই কৃষকদের কাছ থেকে মাষকালাই কিনে মেশিনে ভাল করে পরিষ্কার করা হয়। মাষকলাই থেকে ছাড়ানো হয় কালো খোসা। পরিষ্কার মাষকালাই শুকিয়ে মেশিনে গুঁড়া করা হয়। মাষকলাইয়েরে গুড়া ও চালের গুড়া ভাল করে মিশিয়ে পিস আকারে তেলের মধ্যে কড়া করে ভাজা হয়। এরপর ভাজা জিলাপি চিনির শিরায় মিনিট দশেক রেখে দেওয়া হয়। স্বাদ গন্ধ বাড়াতে এই জিলাপিতে কিছু প্রাকৃতিক মসলাও ব্যবহার করা হয়। কোন রকম রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না বলে দাবি কারিগরদের।
ওই এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই জিলাপি রোজাদাররাই কেনেন বেশি। তাই এটা বানানো ও বিক্রির সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। প্রতি কেজি জিলাপি বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। রমজান মাসে ওই রোডের ছয়টি দোকানে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার কেজি মাষকলাইয়ের জিলাপি বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।
শেরপুর ও নরসিংদীতেই এই ধরনের বিশেষ মিষ্টি বেশি পাওয়া যায় বলে দাবি করছেন, ব্যবসায়ীরা। জেলার মিষ্টির শীর্ষ ব্যবসায়ী নন্দ গোপাল মিষ্টান ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী উদ্ভভ ঘোষ ও কানাই লাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মঙ্গল ঘোষ বলেছেন, রোজাদারদের পছন্দের একটি মেন্যু হলো এই জিলাপি। রোজদারদের চাহিদার ভিত্তিতেই বানানো হয় এই জিলাপি। যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সতর্কতার সাথে রোজার মাসব্যাপী এই জিলাপি বানানো হয়। তবে কারিগর সঙ্কট ও কাঁচামালের দাম বাড়াতে অনেকেই এই মিষ্টি বানাতে চাচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল