২০ মে, ২০২২ ২২:৩৩

বগুড়ায় যমুনা বাঙ্গালী করতোয়া নদীতে বাড়ছে পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় যমুনা বাঙ্গালী করতোয়া নদীতে বাড়ছে পানি

বগুড়ায় যমুনা, বাঙ্গালী ও করতোয়া নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফসল রক্ষার্থে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের মুখ বাঁধছেন কৃষক। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে নৌঘাটগুলো।

চলতি বছরে দ্বিতীয় দফায় বগুড়া সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায়  যমুনা এবং বাঙালি নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। প্রথম দফায় গত এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে পানি বেড়েছিল। অসময়ের এই পানি বেড়ে যাওয়ায় বোরোধান পিঁয়াজসহ নানা ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। পরে পানি কমে যায়। গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা এবং বাঙালি নদীতে পানি পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে। ফলে যমুনা এবং বাঙালি নদীর অববাহিকায় কৃষকের পাটের ফসল হুমকিতে রয়েছে।

দ্রুত পানি বেড়ে যাওয়ায় খালের মুখ বাঁধতে শুক্রবার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউপির পারতিত পরল গ্রামের একটি জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের পর কৃষকদের একত্রিত হতে বলা হয়। ফলে কৃষকরা একত্রিত হয়ে বিকালে পারতিত পরল গ্রামের যমুনা নদীর খাল স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধাই করেন।

এ বিষয়ে পারতিত পরল আকন্দ পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, যে হারে পানি বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে শনিবারের মধ্যেই খালে পানি ঢুকবে। পানি ঢুকলে আমাদের ১১০ বিঘা জমির পাট পানিতে তলিয়ে যাবে। সবেমাত্র আমরা পাট বুনেছি। পাটগাছ মাত্র ৪ ফুট লম্বা হয়েছে। 

গত কয়েকমাস ধরে যমুনা নদীতে নাব্যতা সংকট ছিল। নাব্যতা সংকটে উপজেলার বেশ কয়েকটি নৌঘাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যমুনা নদীর পানি কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় এসব নৌঘাটগুলো পুনরায় সচল হতে শুরু করেছে।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে নদীতে নৌকা চলাচলের পথ স্বাভাবিক হয়েছে। 

সারিয়াকান্দি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে গত কয়েকদিন হতেই নদীগুলোতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে পানি বাড়লেও এখনও বিপদসীমার নীচেই রয়েছে। 

পানি বাড়ার কারণে যমুনার ডাকাতমারা, মূলবাড়ী, ইন্দুরমারা, কাজলা, বেনিপুর, বাওইটোনা, বেড়াপাঁচবাড়িয়া, চরদলিকা, চালুয়াবাড়ী, বেনিপুর, শোনপচা, চরঘাগুয়া বিভিন্ন চরসহ প্রায় ১১২ টি চরের গ্রামের মানুষ তাদের নিজস্ব নৌকা নিয়েই নদীপথে সহজেই চলাচল করতে পারছেন। 

সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, শুক্রবার যমুনা নদীতে পানির উচ্চতা ছিল বিকাল ৩ টায় ১৫. ১৩ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় পানির উচ্চতা ১৪.৬৫ সেন্টিমিটার, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৩৬ সেন্টিমিটার। যমুনা নদীর পানির বিপদসীমা ১৬.৭০ সেন্টিমিটার। শুক্রবার ৩ টায় বাঙালি নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৪২ সেন্টিমিটার। বাঙালি নদীর পানির বিপদসীমা ১৫.৮৫ সেন্টিমিটার। 

সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ তাসকিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা এবং বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমাদের তথ্যমতে এ ধাক্কায় পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুব কম। বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পানি তাড়াতাড়ি নেমে যাবে। তাই বন্যার সম্ভাবনা খুবই কম রয়েছে। 

এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা আতঙ্কিত রয়েছেন। এখন বন্যার সম্ভাবনা খুব কম। তবে বন্যা হলে তা মোকাবিলায় আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর