বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উত্তর আমড়াগাছিয়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাইয়ের মারধরে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর তালুকদার (৫২)। এ ঘটনার একমাসের মাথায় গত ১৩ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। পরে থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
তবে জাহাঙ্গীর তালুকদারকে হত্যা করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবার দাবী করছেন। পুলিশের সহায়তায় ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। রবিবার সকালে শরণখোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তারা।
নিহতের ছেলে মো. নাইমুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, জমি নিয়ে চাচাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। ঘটনার দিন গত ১১ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে চাচা আলমগীর তালুকদার (৪৮) আমাদের বাড়ির সীমানায় ঢুকে নারকেল গাছ থেকে জোরপূর্বকক ডাব পাড়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আমার বাবা জাহাঙ্গীর তালুকদার বাধা দিলে তাকে গাছের সঙ্গে বেধে মারপিট করেন। আমার বাবাকে লোহার রড দিয়ে মুখে আঘাত করলে তার মুখ থেঁতলে যায়। রডের আঘাতে একটি দাঁত ভেঙে যায় এবং দুটি দাঁত মারাত্মকভাবে জখম হয়।
বাবার চিৎকার শুনে আমার মা তাসলিমা বেগম ছুটে গেলে তাকেও পরনের শাড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেধে মারতে থাকেন তারা। পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় বাবাকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনায় রেফার্ড করে চিকিৎসকরা। এ ঘটনার এক মাস তিন দিন পর মারা যান তিনি। আমার বাবাকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে।
এই ঘটনার পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন আমার আরেক চাচা শরণখোলা সরকারি কলেজের প্রভাষক মো. জামাল হোসেন তালুকদার। তার পরিকল্পনায় আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার ইন্ধনে হত্যাকারী আলমগীর তালুকদার ও তার ছেলে রোকন তালুকদার অব্যাহত ভাবে আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় অবস্থায় আছি। থানায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রভাষক জামাল হোসেন তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় আমার কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। তারা অহেতুক আমাকে জড়িয়ে আমার মানসম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে পাঠাই। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর