পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে কেরণখোলা আত্রাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলার নওয়াগাওসহ বিভিন্ন গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। অন্যদিকে কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর ডাক বাংলো পয়েন্টে গেল ২৪ ঘণ্টায় ৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা আশংকা করছেন এবার সিলেটের মতো ভয়ংকর বন্যা হতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুধুমাত্র কলমাকান্দাতেই বৃষ্টি হয়েছে ৪০ মিলিমিটার।
এতে সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরে পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরী, কেরণখোল, কলমাকান্দায় কংশ, মহিষখোলা, গনেশ্বরী, মঙ্গলেশ্বরী, মহাদেও খালিয়াজুরীর ধনু, নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরইমধ্যে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দার বিভিন্ন ইউনিয়নে নদী তীরবর্তী গ্রামের নিন্মাঞ্চল পাঁচগাঁও সীমান্ত এলাকাায় দুর্ভোগের শুরু হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় কাটা হয়নি ফসল। চোখের সামনেই তলিয়ে গেছে কয়েকশত হেক্টর জমির সোনালী ধান।
ইতিমধ্যেই কেরণখোলা নদীর পানিতে দূর্গাপুর চন্ডিগড় ইউনিয়নের নওয়াগাওসহ হরিপুর, লিলা খালি এমন বেশকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবসী।
এ ছাড়াও অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কলমাকান্দার একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কয়েকশত কৃষক পরিবার। মুহূর্তেই পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক হেক্টর জমির পাকা ধান। কেউ কেউ কিছু ধান সংগ্রহ করতে পারলেও বৈরী আবহাওয়ায় শুকতে না পেরে চারা গজিয়ে নষ্ট হচ্ছে শতশত মন ধান। নষ্ট হয়ে গেছে গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য খড়ও।
কলমাকান্দার পোগলা ইউনিয়নের পাঠানপাড়া, সাতপাকের ভিটা, শুনই, গাছতলাসহ বিলপাড় গ্রামে বসবাসরত অন্তত কয়েক শত পরিবারের অবস্থা প্রায় একই রকম। বছরের একমাত্র ফসল হারিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে পরিবারগুলোর।
বৈরী আবহাওয়ায় ধান কাটতে না পারায় জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাধিক হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এফ এম মোবারক আলী।
এদিকে বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান। সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল