পরকীয়া প্রেমিকের সাথে মায়ের অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয় বরিশালের উজিরপুরের হারতা এলাকার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ্ত মণ্ডলকে (৮)। হত্যার পর শিশুটিকে দুই দিন ফেলে রাখা হয় সেলুনের মধ্যে বসার জন্য তৈরী বক্সের মধ্যে। দুই দিনে মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হলে ২৯ মে লাশটি বস্তায় ভরে ডোবায় ফেলে দেয় মা সীমা মণ্ডল, তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীল এবং সেলুন মালিক রতন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ইভা বিশ্বাস। ৩১ মে ভোর রাতে ডোবা থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত এই ৪ আসামি গত বুধবার সন্ধ্যায় বরিশাল আদালতে শিশু দীপ্ত হত্যার ঘটনায় স্বীকোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
দীপ্ত মণ্ডল ওই উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাজী বাড়ির দীপক মণ্ডলের ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড় ছিলো।
উজিরপুর থানার ওসি আলী আর্শাদ জানান, গত ২৭ মে রাতে ১১টার দিকে দীপ্তর মা সীমা মণ্ডল তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীলের সাথে তার কর্মস্থল সেলুনের শার্টার আটকে অনৈতিক কাজ করছিলো। দীপ্ত তার মাকে খুঁজতে খুঁজতে নয়ন শীলের সেলুনের শার্টার টেনে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে মাকে পায়। এসময় পরকীয়া প্রেমিক ও মা মিলে গলা টিপে দীপ্তকে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তার মরদেহ সেলুনে গ্রাহকের বসার জন্য কাঠের তৈরী বক্সের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। দুইদিন বক্সের মধ্যে থাকায় লাশটি পচন ধরে। এতে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশংকায় ২৯ মে রাতে বস্তায় ভরে শিশুর লাশটি অদূরে একটি ডোবায় ফেলে দেয় তারা দুইজন সহ সেলুন মালিক দম্পত্তি। ২৮ জুন দীপ্তর বাবা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন। দীপ্ত নিখোঁজের ঘটনায় আচরণে সন্দেহ হওয়ায় এলাকাবাসী নয়ন ও রতনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা দীপ্তকে হত্যার কথা স্বীকার করে। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার বরিশাল মর্গে প্রেরন করে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে নয়ন ও সেলুন মালিক দম্পত্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারা নয়ন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা সীমার অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশুটিকে হত্যা এবং হত্যার পর লাশ লুকাতে সহযোগীতার কথা স্বীকার করেন। পরে সীমাকেও আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় দীপ্ত মণ্ডলের বাবা দীপক মণ্ডল বাদী হয়ে ৩১ মে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গত ১ জুন বিকেলে ৪ জনকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতে তারা ৪ জন দীপ্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। উজিরপুর থানার ওসি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন