নিখোঁজের তিনদিন পর লালমনিরহাটের তিস্তা নদী থেকে ফরিদা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতুর দেড়শ গজ পূর্বদিকে তিস্তা নদীর পাড় থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, নিহত ওই গৃহবধু লালমনিরহাট জেলার হারাটী ইউনিয়নের কিসামত চোঙ্গাদারা গ্রামের ছাত্তার আলীর দ্বিতীয় মেয়ে এবং খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মৃত নবিয়ার খাড্ডার ছেলে দুলাল হোসেনের স্ত্রী। তার দু’টি সন্তান রয়েছে।
নিহতের পিতা ছাত্তার আলী গত মঙ্গলবার লালমনিরহাট সদর থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে লালমনিরহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। পরে নিহতের পরিবারকে খবর দিলে ফরিদার বাবা ঘটনাস্থলে এসে তার মেয়ের লাশ সনাক্ত করেন। পরে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি মর্গে প্রেরণ করা হয়।
নিহত ফরিদা বেগমের বাবা ছাত্তার আলী জানান, ৬-৭ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে পার্শ্ববর্তী খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মৃত নবিয়ার খাড্ডার ছেলে দুলাল হোসেনের সাথে তার দ্বিতীয় মেয়ে ফরিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে দু’টি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। দুই সন্তান নিয়ে তার মেয়ের সংসার ভালই চলছিল। গত মঙ্গলবার জানতে পারি শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিহত ফরিদাকে নির্যাতন করেছেন। এরপর থেকে ফরিদাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে বুধবার রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় মেয়ে নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
নিহতের মা মনোয়ারা বেগমের অভিযোগ, দীর্ঘ ৭ বছর আগে দুলালের সাথে আমার মেয়ে ফরিদার বিয়ে হয়। বর্তমানে ফরিদার ঘরে ৬ বছরের শরিফুল ও ৪ বছরের আমিনুর নামে দু’টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে জামাতা দুলাল আমার মেয়েকে কারণে-অকারণে অমানুষিক নির্যাতন করত এবং কয়েকবার হত্যারও চেষ্টা করেছিল সে। এবার সে আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ তিস্তা নদীতে ফেলে দিয়েছে।
এ ঘটনার পর নিহত ফরিদা বেগমের শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম বলেন, গৃহবধূ ফরিদাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অথবা এটি আত্মহত্যাও হতে পারে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তরিত জানা যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক