মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বরমচাল ইউনিয়নে শিক্ষকের বেধড়ক মারধরে সিদ্দেক আলী (১৪) নামে ৮ম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বরমচাল খন্দকার মাদ্রাসায় নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। পরে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। সিদ্দেক ওই ইউনিয়নের আলীনগরের বাসিন্দা মখদ্দছ আলীর ছেলে।
শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা মাদ্রাসা সহ-সুপার মাওলানা মাহতাবুর রহমানকে অভিযুক্ত করে এ বিষয়ে কুলাউড়া থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত মাদরাসা ছাত্রের পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন, বরমচাল খন্দকার মাদরাসা সহ-সুপার মাওলানা মাহতাবুর রহমান বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ৮ম শ্রেণির ছাত্র সিদ্দেক আলীকে মারপিট করেন। এতে সে ঘাড়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মাদ্রাসার অভিভাবক কমিটির সদস্য কামাল উদ্দিনসহ এলাকার লোকজন আহত ছাত্রকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তাররা সিদ্দেক আলীর ঘাড়ে এক্সরে করার পরামর্শ দেন। ঘাড়ের জখম গুরুতর হলে তাকে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।
এ ঘটনার পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীর মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করেন, গত দু’দিন আগে ওই শিক্ষক আমার ছেলেসহ ছাত্রদের মারপিট করেছেন। এ জন্য ভয়ে মঙ্গলবার সিদ্দেক আলী মাদ্রাসায় যায়নি। বিষয়টি আমি মাদ্রাসা সুপার লুৎফুর রহমানের কাছে জানিয়েছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোয় ক্ষোভে ওই শিক্ষক বুধবার মাদ্রাসায় যাওয়ার পর আমার ছেলেকে আবারও মারধর করেন।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এভাবে মারপিট না করার জন্য সুপারসহ অন্যান্য শিক্ষকরা সতর্ক করেন সহ-সুপারকে। কিন্তু তারপরও কাউকে পাত্তা না দিয়ে এমন কাণ্ড করলেন তিনি। আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত সহ-সুপার মাওলানা মাহতাবুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। দুষ্টামির কারণে তিনি মারপিট করেছেন। ঘটনার পর কমিটির লোকজনসহ বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। ছাত্রের চিকিৎসা করানোর জন্য টাকাও দেয়া হয়েছে। মারার সময় চড় মারতে গিয়ে ছাত্রের ঘাড়ে আঘাত লাগে।
এ বিষয়ে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা লুৎফুর রহমান বলেন, সিদ্দেক দুইদিন আগে তাকে মারধরের বিষয়ে আমাকে জানায়। আমি বিষয়টি নিয়ে সহ-সুপারকে সতর্ক করি। তবুও আজ এমন ঘটনা ঘটালেন মাওলানা মাহতাবুর রহমান। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয়ে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, বিষয়টি তিনি জেনে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর