ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আব্দুর রহিম নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী। গুরুত আহত বেশ কয়েকজনকে বরিশাল নেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ ৭ জনকে আটক করেছে। আজ দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় কর্মী হত্যার বিচার দাবি করেছেন। অপর দিকে পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিং করে জানান, বিএনপি কর্মী মাথায় আঘাত জনিত কারণে নিহত হয়েছেন। তিনি গুলিতে নিহত হননি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং এর প্রতিবাদে বেলা ১১ টায় ভোলা জেলা বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। শহরের কালীনাথ রায়ের বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সমাবেশ শেষে মিছিল করতে রাস্তায় নামে দলীয় নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাধে তাদের। সংঘর্ষে পুলিশকে লক্ষ করে ব্যাপক ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। অপর দিকে পুলিশ ৩০ রাউন্ড টিআরসেল ও ১৬৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন জানান, বিএনপি কর্মীরা প্রথমে পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছোড়ে। সংঘর্ষে ১২ পুলিশ আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তিনি আরও জানান, পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৩০ রাউন্ড টিআরসেল এবং ১৬৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
অপর দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর তার নিজ বাসভবনে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, বিনা উসকানিতে পুলিশ নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিম নিহত হয়েছেন। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ূন কবির, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি এই ঘটনার বিচার দাবি করেন।
এদিকে বিকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, সমাবেশের অনুমতি না নিয়েই বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে। তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ বাধা দেয়নি। সমাবেশ শেষে রাজনৈতিক হিন উদ্দেশ্যে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষে বিএনপি রাস্তায় নেমে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করে। ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ ব্যাপক ভাংচুর করেছে। এতে ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
অপর দিকে বিএনপি কর্মী নিহত হওয়া প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার আরও জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত সত্য জানা যাবে। তবে ডাক্তারের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মাথায় আঘাত জনিত কারণে যুবদল কর্মী আব্দুর রহিম নিহত হয়েছেন। পুলিশের ধারণা বিএনপি কর্মীদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে আব্দুর রহিম নিহত হয়ে থাকতে পারেন।
এদিকে শহরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিকালেও শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল