চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কমপক্ষে ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টায় কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভা শুরু হওয়ার আগেই বিশ্বরোড এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। থেমে থেমে দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে।
আসন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে শাহজাহান শিশির ও সাধারণ সম্পাদক পদে এড. হেলাল, কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলম স্বপনসহ অন্যান্য প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে পাল্টাপাল্টি মিছিল, শোডাউন, ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া সংঘর্ষে রূপ নেয়। মহড়া ও সংঘর্ষ চলাকালীন স্থানীয় লোকজনের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষে এসআই আনোয়ার ও কনস্টেবল রাছেলসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়।
তন্মধ্যে গুরুতর আহত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য কার্তিক রায় ও ছাত্রলীগ নেতা সজিব হোসেনকে কুমিল্লা মেডিকেলে, ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন, নাজমুল, যুবলীগ নেতা মানিক, নাসিমকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন সবুজ, আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম, তোফায়েল, কাউছার, সাগরসহ অন্যরা বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে কচুয়া বিশ্বরোডে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম খলিল বাদলের 'নিউ সৌদিয়া হোটেল' ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া 'মডার্ন হসপিটাল', উপজেলা পরিষদ ভাইস-চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের অফিস, সেলুন, নজরুলের 'ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজ', সুধিরের 'মুদি দোকান' ভাঙচুর হয়।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, কচুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন, সিনিয়র এএসপি (কচুয়া) আবুল কালাম চৌধুরী ও কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এড. হেলাল বলেন, আমার কোন লোকজন এ ধরণের শোডাউন ও সংঘর্ষে ছিল না এবং আহত হয়নি।
কচুয়া পৌর মেয়র নাজমুল আলম স্বপন জানান, বর্ধিত সভা খুবই সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সভার পূর্বে সড়কে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়েছে। এখানে সবই আমাদের দলের লোকজন। তবে সকালে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবু আলমের অফিস ভাংচুর করার পর সংঘর্ষে রুপ নিতে থাকে। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় বলেন, সকালেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়। তাদের চিকিৎসা চলছে। বিকেল পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সকলকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে। এখন আর কোন ধরনের উত্তেজনা নেই।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন